দেশে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিক ফারজানা আহমেদ নিপা জানান, কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে গত ৯ মাস আগে কুমিল্লার কমলনগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন কুমিল্লার এই বিউটিশিয়ান। ভারতের প্রবেশ করার পরদিনই তিনি সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। যেতে হয় জেলে। দীর্ঘ ছয়মাস কারা বরণের পর আদালতের মাধ্যমে মুক্তি মিললে সেখানকার একটি সেইফ হোমে ঠাঁই হয় নিপার।
এরপর ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনারের মধ্যস্থতায় এবং দুই দেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সহযোগীতায় নিপাসহ ১১বাংলাদেশি নাগরিক নিজ দেশে ফেরেন।
দীর্ঘ ৯মাস পর নিপা দেশের মাটিতে পা রেখে তার ফেলে যাওয়া পাঁচ বছরের কন্যা ইকরা বিনতে আরিশাকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এসময় তিনি জানান, কেউ যেন অবৈধপথে ভারতে মাটিতে পা না রাখেন। তুলে ধরেন দীর্ঘ ৯মাসের দুঃসহ স্মৃতির কথা। দীর্ঘদিন পর একমাত্র আদরের কন্যাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন নিপা।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টেঁটার আঘাতে নিহত ১, আহত ১০
ভারত থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিক কবীর শেখ ও মো: আশরাফুল হক জানান, গত ৮ মাস আগে কাজের সন্ধ্যানে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা হয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করেছিলেন ৮জন বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকসহ ১০ বাংলাদেশি নাগরিক। পরে তারা সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। দীর্ঘ ৬ মাস কারাবরণ শেষে নিজ দেশে ফিরে আসেন।
শঙ্কা ও স্বস্তি প্রকাশ করে কবীর ও আশরাফ জানান, তাদের মতো ভুল যেন কেউ না করেন।
দুই দেশের সীমান্তের শুন্য রেখায় বাংলাদেশের নাগরিকদের বিদায় জানান, ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনের সিনিয়র অফিসার ওমর ফারুক। এসময় তাদেরকে গ্রহণ করেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিএম রাশেদুল ইসলাম ও ইমিগ্রেশন অফিসার আব্দুস সাত্তার।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কের পাশে মিলল যুবকের চোখ উপড়ানো মরদেহ
পরে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের নগদ অর্থসহ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। এ সময় মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে সিনিয়র অফিসার মো. শিহাবুল হোসেনসহ চার সদস্যের প্রতানিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনের তথ্য অনুযায়ী আরো ১৪জন বাংলাদেশী নাগরিক সেখানকার কারাগার এবং সেইফ হোমে রয়েছে। তাদেরকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।