বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তাদের যাশোরের বেনাপোল চেকপোস্টে হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াজ হোসেন মুন্সী।
ফেরত আসা নারী-শিশুদের আইনি সহায়তা দিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো হেফাজতে নেয়। এর মধ্যে রাইটস যশোর ৭ জন, মহিলা আইনজীবী সমিতি ৫ জন ও জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার ৫ জনকে গ্রহণ করেছে।
ফেরত আসাদের মধ্যে রয়েছেন: গাজীপুরের দিপা, চাপাইনবাবগঞ্জের মইন খান, হবিগঞ্জের নুর আলম, গোপালগঞ্জের হৃদয় মণ্ডল, কুষ্টিয়ার ইমরান শেখ, লক্ষ্মীপুরের মেহেদী হাসান, খুলনার নাহিদ মোরল, নড়াইলের ফয়সাল সেখ, বাগেরহাটের রানা হাওলাদার, লালমনিরহাটের মল্লিকা রানী, কিশোরগঞ্জের সামিরা আক্তার, রাঙামাটির সারা জান্নাত, লক্ষ্মীপুরের ইমু খাতুন, পাবনার মিথিলা রহমান, বাগেরহাটের সাইম জমাদ্দার, নওগাঁর কমল সরদার এবং পাবনার নুরজাহান খাতুন।
আরও পড়ুন: ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল স্থলবন্দরে রফতানি বাণিজ্যে ধস
রাইটস যশোরের তথ্য ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা তৌফিকুজ্জামান জানান, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে স্বদেশ প্রত্যাবাসনের সুযোগ পায় তারা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ফেরত আসা শিশু ও কিশোরদের আইনি সহায়তা ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেবে এবং পরে তাদের পরিবারে হস্তান্তর করবে।
জানা গেছে, ভালো কাজ কিংবা প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে নারী-শিশুদের ভারতে পাচার করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। সেখানে নিয়ে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়। পাচারের শিকারদের মাত্র ৫ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়, বাকিদের বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য নেই সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে।
এই ১৭ বাংলাদেশিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি হোম থেকে উদ্ধার করা হয়। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। আটক হওয়ার পর আইনি জটিলতায় অনেককে দুই বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ভারতের হোমে থাকতে হয়েছিল। অবশেষে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের স্বদেশ প্রত্যাবাসনের উদ্যোগে দেশে ফেরার সুযোগ পেল তারা।
মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, তাদের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৫০ হাজার নারী-পুরুষ পাচারের শিকার হয়ে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছে। অনেককে কাজ বা প্রেমের প্রলোভনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। পরে তাদের দিয়ে জোরপূর্বক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগানো হয়।
]]>