বুধবার (১৪ মে) বিকেল ৪টার থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা এ সংঘর্ষ চলে। নিহত নিয়াজুল হোসেন ওই গ্রামের তোতামিয়ার ছেলে। এদিকে নিহতের ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ রিপোর্ট (রাত সাড়ে ৮টা) লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল।
পুলিশ ও প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার নাটাই ইউনিয়নের চান্দের গোষ্ঠীর সঙ্গে সলিমের গোষ্ঠীর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই মধ্যে গত সোমবার রাতে সলিম গোষ্ঠীর এক যুবক চান্দের গোষ্ঠীর বাড়িতে ইয়াবা সেবন করতে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। এসময় চান্দের গোষ্ঠীর লোকজন ইয়াবা সেবনে বাধা দিলে উভয়পক্ষের যুবকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় জমি নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫
এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকালে দুই গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের ছোড়া ইট পাটকেলের আঘাতে অন্তত ১০ জন আহত হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে আবার উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুরো গ্রামজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে টেঁটার আঘাতে চান্দের গোষ্ঠীর নিয়াজুল হোসেন গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার ভাইকে নির্মমভাবে টেঁটা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
নিহতের স্বজন দিলারা বেগম বলেন, ‘নিয়াজুল হোসেন খুব ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি ঝগড়া করতে যাননি, থামাতে যাওয়ার পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: একপক্ষ এলাকায় ঢুকতেই ঘিরে ধরে অপরপক্ষ, সংঘর্ষে আহত ৩০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফ্ফর হোসেন জানান, গ্রামে একপক্ষের একজনের মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করছেন। ঘটনা ঘটনাস্থলে র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, নিহতের বাম চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বুকে আঘাতজনিত কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।