বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতার নামে মামলা প্রত্যাহার না হলে লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

১ সপ্তাহে আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির দুই সদস্যসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের করা মামলা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার না হলে বিক্ষোভ ও হরতালসহ লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে তারাগঞ্জের সর্বস্তরে মানুষের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

 

তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে চিকিৎসা প্রদানে অনীহা, সেবাপ্রার্থীদের হেনস্তা, বিলম্বে চিকিৎসা, চিকিৎসকদের কর্মবিরতি বন্ধ দাবিতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘চিকিৎসককে মারধরের যে অভিযোগ এনে তারাগঞ্জে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেই মারধরে ভিডিও যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ করতে না পারে, তাহলে তাদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে মার্চ ফর তারাগঞ্জ থানা গণ স্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হবে। সিভিল সার্জন মারধরে ঘটনা প্রমাণ করতে না পারলে তাকে রংপুর থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে লাগাতার কর্মসূচি, অবরোধ, বিক্ষোভ এবং হরতালের মতো কর্মসূচি আমরা পালন করতে বাধ্য হব।’

 

বৈষম্যবিরোধী এই ছাত্র নেতা আরও বলেন, ‘দুটি নিরাপরাধ ছেলেকে তারা সন্ত্রাস রূপে উপস্থাপন করতে চেয়েছে। যখন আপনার বাবাকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করে বলবে- তোর বাপ মারা গেলেও আমি চিকিৎসা দেব না। তখন মানসিক অবস্থা কী হবে চিন্তা করেন। তখন সেই ছেলে বলেছে- আপনাকে আমরা দেখে নেব। এই কথাটা খুব একটা খারাপ বলেছে বলে আমি মনে করি না। এ নিয়ে আমরা কয়েক দফা তাদের সঙ্গে বসেছি। কিন্তু তারা মিথ্যা মামলা দিল। তারা মারধরে ভিডিও দেখাতে পারেনি। এখন বলে ক্যামেরা নষ্ট।’

 

মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির সদস্য সচিব ড. জামিল বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। যেটা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক মানুষের আছে। আপনারা মামলা করেছেন, আইনকে আইনের মতো এগোতে দেন। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেন।’

 

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে রংপুরে বুধবার আধাবেলা ধর্মঘট

 

মানববন্ধনে অন্য বক্তরা হাসপাতালের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, দায়িত্ব অবহেলা কথা উল্লেখ্য করে ওই দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

 

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাধারানী মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আতাউর রহমান বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবরিনা মুসরাত জাহান মৌ ওই রোগীকে হৃদরোগে আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এরপর তিনি অন্য রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত হন।

 

এ সময় সেখানে রোগী আতাউর রহমানের ছেলে তাহমিদ সরকার তুর্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটির সদস্য তাওরাতসহ আরও চার পাঁচজন সেখানে যান। চিকিৎসক সাবরিনা মুসরাত জাহান মৌয়ের অভিযোগ, তাহমিদ সরকার তুর্য ও তাওরাতসহ আরও চার পাঁচজন সেখানে সমন্বয়ক পরিচয়ে ওই চিকিৎসককে অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তার শরীরে আঘাত করেন।

 

এ ঘটনা চিকিৎসক সাবরিনা মুসরাত জাহান মৌ তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার পরদিন গত শনিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। এতে দুর্ভোগে পড়েন উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের সেবাপ্রার্থীরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন