এদিকে, নির্বাচনী প্রচারণায় চমকে দিতে চাওয়া নেতারা বলছেন, পুরনো ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে নতুনরূপে গণসংযোগের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। তাদের প্রত্যাশা, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক হবে।
গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের সাড়ে ৬ মাস পর, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের উদ্দেশ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব থাকা তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কার ও আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে অনড় এনসিপি। মৌলিক সংস্কার বলতে ঠিক কোন সংস্কারগুলোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি, তা জানালেন এনসিপি নেতারা।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, মৌলিক সংস্কারের মানে হলো আমাদের রাষ্ট্রের যে স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি আছে তাকে বিলুপ্ত করে একটা গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করা। এখন যে এরেঞ্জমেন্ট সেখানে রাষ্ট্র, সরকার, দল, প্রশাসন মিলে ভংঙ্কয় একটা সিন্ডিকেট হয়ে দাঁড়ায়। যা দল তাই সরকার, তাই রাষ্ট্র, তাই প্রশাসন। বিচার বিভাগকে যেনো রাজনীতিকরণ করতে না পারে। নির্বাহী বিভাগ আইন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: হাসিনার নামের আগে ‘খুনি’ শব্দ মোছার চেষ্টা চলছে: সারজিস
দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যাতে স্বৈরতান্ত্রিক না হতে পারে সে কারণে দুই বারের পর কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। মন্ত্রী পরিষদ শাসিত সরকার হতে হবে। মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নেবে।
সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলে, সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন সম্ভব বলে জানান এনসিপি নেতারা। ভোটে বিলম্বের পক্ষে নন বলেও জানান তারা।
নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব। সংস্কারের সবগুলো রিপোর্ট চলে এসেছে। যদি দলগুলো, বিভিন্ন পক্ষগুলো এক রুমে বসে আলোচনা করে। তাহলে এক থেকে দুই মাসের বেশি সময় লাগার কথা না।
সরোয়ার তুষার আরও বলেন, যে সময়ই নির্বাচন হোক আমরা সর্বোচ্চ ভালো ফল করতে চাই। পৃথিবীতে সাম্প্রতিক এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যেখানে নতুন দল হিসেবে চমক সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব সালাউদ্দিন তানভীরকে অব্যাহতি
নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার প্রত্যাশা করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুউদ্দীন পাটোয়ারী। পুরানো রীতি থেকে বেরিয়ে নতুন রূপে গণসংযোগের মাধ্যমে এনসিপির পক্ষে জনমত তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
নাসিরুউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচন আচরণবিধিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ক্যাম্পেইন বাজেটেও পরিবর্তন আনতে হবে এবং আরপিওর অনেকগুলো নিয়ম রয়েছে যেগুলো জনবিরোধী সেগুলো পরিবর্তন করতে হবে। এগুলোতে পরিবর্তন আনতে দলগুলোর কৃষ্টি কালচাল পরিবর্তন করতে হবে। আমরা ভিন্নভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। লিফলেট বানানো কাজ শুরু করে দিয়েছি। জনগণের কাছে গিয়ে বোঝানো চেষ্টা করছি।
প্রস্তাবিত মৌলিক সংস্কারগুলি না করে নির্বাচনে গেলে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হবে বলেও মনে করেন এনসিপির এই শীর্ষ নেতা।