ডেনিস লিলি, ওয়াকার ইউনিস, ডেল স্টেন, ম্যালকম মার্শাল, রিচার্ড হ্যাডলি, জোয়েল গারনার। অল্পস্বল্প ক্রিকেট দেখেন, এমন সবার কাছে নামগুলো খুব পরিচিত লাগতে বাধ্য। টেস্টের সেরা বোলারদের অন্যতম তারা। মেলবোর্ন টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে এদের সঙ্গেই উচ্চারণ করা যাচ্ছে বুমরাহর নাম। ভারতীয় পেসার কোনো হিসাবে এদের ছাড়িয়ে যাচ্ছেন, আবার অন্য হিসাবে বসছেন পেছনের সিটে। তাছাড়া খেলাটায় প্রভাব তো রাখছেনই।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ট্রাভিস হেডের উইকেটের মাধ্যমে টেস্টে ২০০ উইকেট পূর্ণ হয় বুমরাহর। এর মাধ্যমে প্রায় দেড়শ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে ২০-এর কম গড়ে এই মাইলফলকে পৌঁছা প্রথম ক্রিকেটার বনে গেলেন তিনি। বিনিময়ে রান দিয়েছেন ৩ হাজার ৯১২। ইতিহাসে আর কোনো বোলার ৪ হাজারের কম রানের খরচায় দুশো উইকেট পাননি। গারনার এই ফলকে পা দিতে দিয়েছিলেন ৪ হাজার ৬৭ রান, শন পোলকের ক্ষেত্রে ৪ হাজার ৭৭।
৪৪ ম্যাচে ২০০ উইকেট নিতে কত বল করতে হলো বুমরাহকে? ৮ হাজার ৪৮৪। তার সামনের সিটে মাত্র তিনজন—ওয়াকার (৭৭২৫), স্টেন (৭৮৪৮) ও কাগিসো রাবাদা (৮১৫৪)। ম্যাচ বিবেচনায় পেসারদের ধর্তব্যে নিয়ে হিসাব করলে ভারতীয় পেসার মাত্র ৬ জনের পেছনে। দুশো উইকেট নিতে লিলি ও ইউনিসের ৩৮টি করে, স্টেনের ৩৯, বোথামের ৪১ এবং মার্শালের ও অ্যালান ডোনাল্ডের ৪২টি করে ম্যাচ লেগেছে।
আরও পড়ুন: ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা ভারতকে বিপদে ফেললেন
এবার আসা যাক প্রভাবের বিবেচনায়। সেনা কান্ট্রি টার্মটা তো বুঝেন? সেই অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বুমরাহ শিকার করেছেন ৭০ শতাংশের বেশি উইকেট। অন্য ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা শামির সঙ্গে তার পার্থক্য ১৬.৬ শতাংশ। বিদেশে তার বোলিং গড় ২০.২৯, দেশে ১৭.২০।
ব্যাটিং অর্ডারের উপরের সারির ক্রিকেটারদের উইকেটকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা নিয়ম। টেকনিক্যালি তারা দলের সবচেয়ে ভালো ব্যাটার। বুমরাহর উইকেটগুলোর মধ্যে ১০৯টিই ১ থেকে ৫ নম্বরের ব্যাটারের। জো রুটকে সবচেয়ে বেশি বার আউট করেছেন তিনি—৯ বার। পরের নামগুলো কামিন্স (৮) ও হেড (৬)।
আরও পড়ুন: তীরে এসে তরী ডুবাল পাকিস্তান, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দ.
‘মেপে মেপে বল করতে সক্ষম’ বুমরাহর প্রভাব বুঝতে জেতা ও হারা ম্যাচে তার পরিসংখ্যান দেখা যেতে পারে। টেস্টে ভারত জিতেছে এমন ম্যাচে তার উইকেট ১১০। গড় নেমে আসে ১৪.৫০-এ। অর্থাৎ প্রতি ১৪.৫০ রান দিয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেছেন বুমরাহ। ভারত তাকে নিয়ে জিতেছে ২০ ম্যাচ।
যে ফরম্যাটে ৯ জন বোলারের উইকেট পাঁচশর বেশি (তিনজনের সাতশর বেশি, একজনের আছে ৮০০ উইকেট), বুমরাহর দুশো উইকেট সেখানে নগন্যই। ‘নগন্য’ এই প্রাপ্তি নিয়ে বুমরাহ কি সর্বকালের সেরাদের তালিকায় ঢোকার আবেদন তৈরি করেননি?