বিয়ে না করায় আগুনে পুড়ে কলেজছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’, ইমাম আটক

৩ সপ্তাহ আগে
সাতক্ষীরার তালায় সানজিদা আক্তার তুলি (১৭) নামের এক কলেজছাত্রী আগুন পুড়ে মারা গেছেন। প্রেমঘটিত কারণে শরীরে আগুন লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বাড়ির পাশের এক মসজিদের ইমামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ মে) উপজেলার ঘোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত কলেজছাত্রী তুলি উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামের মো. কামরুল সরদারের মেয়ে। দগ্ধ অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থা অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তুলি তালা মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তুলি বাড়ির সামনে উঠানের শেষ প্রান্তে বসে নিজের শরীরে কেরোসিন দিয়ে ভিজিয়ে গ্যাস লাইটের সাহায্যে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় তার মা অন্যের বাড়িতে কাজে ব্যস্ত ছিলেন এবং বাবা খুলনায় রিকশা চালাতে গিয়েছিলেন। গায়ে পুরোপুরি আগুন ধরে গেলে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তার শরীরের অনেকাংশ পুড়ে যায়। বাড়ির উঠানের রাস্তা ও উঠানের পাশে কলাবাগানে পুড়ে যাওয়া জামা-কাপড় পড়ে ছিল। ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনের ব্যাপক গন্ধ অনুভব হচ্ছে। গায়ে আগুন জ্বলতে শুরু করলে সে ছোটাছুটি করে। তাৎক্ষণিক প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

 

আরও পড়ুন: মির্জাগঞ্জে নিজের গলায় কোপ দিয়ে বৃদ্ধের ‘আত্মহত্যা’

 

স্থানীয়রা জানান, তুলিদের বাড়ির সামনেই মসজিদে তিন মাস আগে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চনগনর গ্রামের আমিনুর রহমান নামে এক অবিবাহিত যুবক ইমামতি করতে আসেন। সেই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তুলির। সে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ছেলেটি তা প্রত্যাখান করে। এ ঘটনায় ইমামতি ছেড়ে পালিয়ে যান আমিনুর। তবে শরীরে আগুন লাগানোর আগে তার হাতে কলম দিয়ে আমিনুরের নাম লিখা ছিল।

 

ইসলামকাটি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বলেন, ‘আমি শুনেছি স্থানীয় মসজিদের ইমামের সঙ্গে একতরফা প্রেম চলছিল। মেয়েটা ভালোবাসলেও ওই ছেলেটি তাকে ভালোবাসেনি, যার কারণে সে পালিয়ে যায়। সেই কারণে হয়তো মেয়েটি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে।’

 

আরও পড়ুন: কেন বাড়ছে ধর্ষণ-আত্মহত্যা?

 

এ ঘটনায় তালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে আমি ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা এখনো জানতে পারিনি। বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ইমাম আমিনুর রহমানকে থানায় আনা হয়েছে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন