বিশ্বের মুসলমানদের জন্য এ মসজিদটি গর্বের প্রতীক

৩ সপ্তাহ আগে
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার প্রাণকেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ— ইসতেকলাল মসজিদ। এই বিশাল মসজিদটি কেবল নামাজের স্থান নয়, বরং ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা ও ইসলামি ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল প্রতীক।

‘ইসতেকলাল’ শব্দের অর্থ ‘স্বাধীনতা’। ১৯৪৫ সালে ইন্দোনেশিয়া যখন ডাচ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে, তখন এই স্বাধীনতার স্মরণে একটি বৃহৎ জাতীয় মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর, অবশেষে ১৯৬১ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ১৯৭৮ সালে তা সম্পন্ন হয়।


মসজিদটি আধুনিক ইসলামি স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত, যার নকশা তৈরি করেছেন একজন খ্রিষ্টান স্থপতি, ফ্রেডরিক সিলাবান। এটি ইন্দোনেশিয়ার বহুত্ববাদী সমাজের প্রতিচ্ছবি। এর কেন্দ্রীয় গম্বুজের উচ্চতা ৪৫ মিটার, যা ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার বছরকে (১৯৪৫) নির্দেশ করে। প্রধান ভবনের পাঁচটি স্তম্ভ ইসলামের পাঁচটি রুকনের প্রতীক।

আরও পড়ুন: এক রাতেই তৈরি হয়েছিল এ মসজিদ!

ইসতেকলাল মসজিদ একই সময়ে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লি ধারণ করতে পারে। এই বিশাল ধারণক্ষমতা এটিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মসজিদে পরিণত করেছে। মসজিদের অভ্যন্তর মার্বেল ও অ্যালুমিনিয়ামের সংমিশ্রণে নির্মিত, যেখানে রয়েছে বিশাল নামাজের স্থান। এখানে রয়েছে সুবিশাল মেহরাব ও চোখ ধাঁধানো ঝাড়বাতি।


এ মসজিদের একটি বিশেষত্ব হলো, এটি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাথেড্রাল ‘জাকার্তা ক্যাথেড্রাল’-এর পাশেই অবস্থিত। এই সহাবস্থান ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা ইন্দোনেশিয়ার বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।

 

আলো ঝলমলে এ মসজিদটি দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ছবি সংগৃহীত


মসজিদের ভেতরে রয়েছে একটি বিশাল ইসলামি গ্রন্থাগার, যেখানে ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক গ্রন্থাবলির এক সমৃদ্ধ সংগ্রহ রয়েছে। এছাড়াও, এখানে একটি আধুনিক সম্মেলনকক্ষ ও একটি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে, যেখানে নিয়মিত ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অতিথি ও বিশ্বনেতারা ইসতেকলাল মসজিদ পরিদর্শন করেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: এ মসজিদটিতে ৭০ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন

স্থাপত্যশৈলী, ঐতিহাসিক তাৎপর্য ও ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে ইসতেকলাল মসজিদ শুধু ইন্দোনেশিয়ার নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের জন্য এক গর্বের প্রতীক। এটি ইসলামের সৌন্দর্য, সহনশীলতা ও ঐক্যের বার্তা বহন করে, যা ইন্দোনেশিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। একইসাথে, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মানুষের একসঙ্গে অবস্থানের উদাহরণ তৈরি করে, যা ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন