স্থানীয় গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনের ভিডিওতে দেখা যায়, সমুদ্রের পানিতে যেন ভাসছে বাড়িটি। পাশে বেঁধে রাখা আছে নৌকা। কিছুটা দূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আরও কয়েকটি ঘর। পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় চলে গেছেন প্রতিবেশিরাও। তবে নিজের মাথা গোঁজার ঠাই না ছাড়তে লড়াই করছেন ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের উত্তর উপকূলীয় এলাকার নারী পাসিজাহ।
প্রতিদিন বুক সমান পানিতে নেমে ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করেন পাসিজাহ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০ ধরে এ কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। প্রতি বছর রোপণ করছেন ১৫ হাজার চারা। আশা, পানিতে ভেসে যাওয়ার হাত থেকে এই ম্যানগ্রোভ রক্ষা করবে তার ঘরকে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব জলবায়ু সংকট: স্থিতিশীলতা ফিরবে নাকি ধ্বংসই নিয়তি?
পাসিজাহ বলেন,
জোয়ারের পানি ঢোকে ঢেউয়ের মতো। তবে একেবারে নয়, খুব ধীরে ধীরে। পানি বাড়তে শুরু করার পর আমি বুঝলাম আমাকে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগাতে হবে, যাতে এগুলো ছড়িয়ে বাড়িটাকে সুরক্ষা দেয়। পাখিদেরও আশ্রয় দেয়। এগুলো আমাদের খুব উপকারে এসেছে।
এক সময় বাড়ির আশপাশে ধান, কচু, আলু, মরিচ, চিনাবাদাম চাষ করতেন পাসিজাহ। তবে এখন আর চাষের জন্য জমি নেই। সব চলে গেছে পানির নিচে। পরিবারের জন্য তাই পাসিজাকে কিনে খেতে হয় খাবার। ছেলের মাছ বিক্রির অর্থ দিয়ে চলে সংসার।
তিনি বলেন, ‘একা থাকার কষ্ট এখন কষ্ট নয়। এখানেই থাকতে চাই। ঘরটা ছেড়ে যেতে পারি না।’
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় নদীর তীরে জলবায়ু ধর্মঘট, ‘ভবিষ্যৎ বিক্রয়’ না করার আহ্বান
উপকূল রক্ষায় ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সি-ওয়াল বা দেয়াল নির্মাণের কথা জানিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া সরকার। তবে ততদিনে পাসিজাহর ঘর হয়ত গ্রাস করে নেবে সাগর। জলবায়ু পরিবর্তনের মুখোমুখি দাঁড়ানো বিশ্বের কোটি মানুষের প্রতিচ্ছবি হয়েই রয়ে যাবেন পাসিজাহ।
]]>