রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্সে স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ১৭ দশমিক ২৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা প্রায় দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও দিনের শুরুতে দাম বেড়ে ৪ হাজার ১৬১ দশমিক ১৭ ডলারে উঠেছিল।
আর ডিসেম্বরে ডেলিভারির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ ফিউচার কমেছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ, দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৩২ দশমিক ৮০ ডলারে। এদিকে, মার্কিন ডলার সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ, যা এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: হঠাৎ বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন কেন?
মঙ্গলবার স্বর্ণের দাম একদিনে কমেছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এর আগের সেশনে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে পৌঁছেছিল দাম। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা এবং ইটিএফ বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে চলতি বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।
অ্যাক্টিভট্রেডস বিশ্লেষক রিকার্ডো ইভাঞ্জেলিস্টা বলেন, 'গত কয়েক সপ্তাহে দামের প্রবল উত্থান স্বর্ণকে অতিরিক্ত ক্রয়ের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ফলে অনেক বিনিয়োগকারী এখন মুনাফা নিশ্চিত করতে তাদের অবস্থান বিক্রি করছেন।'
কারিগরি দিক থেকে দেখা গেছে, স্বর্ণের দাম বর্তমানে ২১ দিনের চলমান গড় ৪ হাজার ৫ ডলারে সমর্থন পাচ্ছে। এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি শুক্রবার প্রকাশিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) প্রতিবেদনের দিকে, যা ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর দিকনির্দেশনা দিতে পারে। স্বর্ণ একটি অ-ফলনশীল সম্পদ; তাই সুদের হার কমলে এর দাম সাধারণত বেড়ে যায়।
রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ফেড আগামী সপ্তাহে এবং ডিসেম্বরেও মূল সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরিকল্পিত বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্টোনএক্স বিশ্লেষক রোনা ও’কনেল বলেন, 'বিশ্ব এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। তাই দাম কিছুটা কমলেও নতুন করে ক্রয়ের আগ্রহ তৈরি হবে।'
এদিকে, বিশ্ববাজারে দাম কমায় দেশের বাজারেও কমতে পারে স্বর্ণের দাম। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলে এর প্রভাব পড়ে দেশের বাজারেও। তাই যে কোনো সময় দেশের বাজারেও দাম কমানো হতে পারে।
সবশেষ গত ১৯ অক্টোবর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি। যা এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে মূল্যবান এই ধাতুর সর্বোচ্চ দাম।
আরও পড়ুন: সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ মজুত করেছে যেসব দেশ
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ অক্টোবর থেকে।
বিশ্ববাজারে বড় ধাক্কা খেয়েছে রুপার দামও। স্পট রুপার দাম কমেছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ, প্রতি আউন্স ৪৭ দশমিক ৮৪ ডলারে। মঙ্গলবার রুপার দাম কমেছিল ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
অন্য ধাতুগুলোর মধ্যে প্লাটিনামের দাম কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ, দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৩০ দশমি ৩৫ ডলারে। আর প্যালাডিয়ামের দাম কমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ, দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৯১ ডলারে।

৪ সপ্তাহ আগে
৯







Bengali (BD) ·
English (US) ·