বিশ্বকাপে ‘এলজিবিটিকিউ’ সমর্থকদের স্বাগত জানাবে সৌদি আরব

৩ সপ্তাহ আগে
২০২২ এর কাতার বিশ্বকাপের পুরো সময়টা জুড়ে মানবাধিকারসহ নানান ইস্যুতে সোচ্চার ছিল মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত দারুণ সফল একটা বিশ্বকাপই উপহার দিয়েছিল কাতার। কাতারের পর ফুটবল বিশ্বকায়ের আয়োজক হিসেবে নাম লেখাতে যাচ্ছে সৌদি আরবও। কাতার ও মরক্কোর পর তৃতীয় আরব দেশ হিসেবে ২০৩৪ এর বিশ্বকাপ আয়োজন করবে তারা। মুসলিম দের তীর্থভূমিতে বিশ্বকাপ আয়োজনে নানান বাধ্যবাধকতার শঙ্কায় সরব অনেকেই। বিশেষ করে মদপান, নারী, ট্রান্সজেন্ডার এবং সমাকামী ইস্যুতে মুসলিমদের কট্টর রক্ষণশীল অবস্থান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে পশ্চিমা দেশগুলো।

সৌদি আরব ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হতে যাচ্ছে, এই গুঞ্জন সত্যে পরিণত হয়েছে। একমাত্র দেশ হিসেবে ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিড করেছিল সৌদি আরব। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল এক মিটিংয়ে তাদের আয়োজক স্বত্ব পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।


ফিফার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কও আছে। কারণ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। প্রবাসী শ্রমিকদের নির্যাতনের কথা বলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তাছাড়া সব লিঙ্গের মানুষের অধিকারও সুরক্ষিত নয়। কিন্তু সৌদি আরব আশ্বাস দিয়েছে এই বলে যে, এটা তাদের দেশে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে।


আরও পড়ুন: সৌদিকে আয়োজক বানাতে নিয়ম বদলে ফেলল ফিফা!


এমনকি বিশ্বকাপ উপলক্ষে 'এলজিবিটিকিউ' ইস্যুতেও নমনীয় অবস্থান নেয়ার অঙ্গীকার করেছে সৌদি আরব। ২০৩৪ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে এলজিবিটিকিউ সমর্থকদের ‘সুরক্ষা ও স্বাগত’ জানানোর ব্যাপারে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে (এফএ) নিশ্চয়তা দিয়েছে সৌদি আরব। এমন খবর দিয়েছে খোদ এফএ।


২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হতে একমাত্র দেশ হিসেবে প্রার্থী হয়েছিল সৌদি আরব। গতকাল ফিফার ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বাকি সদস্য দেশগুলো হাততালি দিয়ে সৌদি আরবকে তাদের সমর্থন জানালে নিশ্চিত হয় তাদের বিশ্বকাপের আয়োজকস্বত্ব পাওয়ার বিষয়টি। বাকিদের মতো ইংলিশ ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা এফএ’ও আরব দেশটিকে সমর্থন জানায়। তবে তা বিনাশর্তে নয়, গত মাসে সৌদি ফুটবলের অফিসিয়ালদের কাছে এলজিবিটিকিউ সমর্থকদের বিশ্বকাপের সময় দেশটিতে স্বাগত জানানো এবং নিরাপত্তা প্রদানসহ বেশকিছু বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়ার পরেই তাদেরকে সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এফএ।


এক বিবৃতিতে এফএ এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে, ‘আমরা (সৌদি আরব)কে অনুরোধ করেছিলাম যে, ২০৩৪ সালে সৌদি আরবে সব সমর্থকের 'নিরাপত্তা ও স্বাগত' নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিক – যার মধ্যে এলজিবিটিকিউ প্লাস ভক্তরাও অন্তর্ভুক্ত। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে তারা সব ভক্তের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাগতপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’


আরও পড়ুন: ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক সৌদি আরব


ফুটবলকে ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত করার অঙ্গীকার করে এফএ সেই বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘ফুটবল একটি বৈশ্বিক খেলা এবং এটি সবার জন্য। আমাদের বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতি মানে হলো সবাইকে সম্মান করা, যার মধ্যে সব ধর্ম ও সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত।’


বিশ্বকাপের আয়োজকস্বত্ব পাওয়া সৌদি আরবও মনে করছে, এই বিশ্বকাপ দেশটিতে ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন ঘটাবে, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে বিশ্বকাপ আয়োজন ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য একটি অনুঘটক হতে পারে, যা সর্বোত্তমভাবে আয়োজক দেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। আমরা ফিফা এবং উয়েফা-এর সঙ্গে কাজ করব, যাতে সবার মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সম্ভব হয়।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন