শনিবার (২২ মার্চ) সকালে মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে পশুর নদীর পাড়ে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে খালি কলস হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে উপকূলীয় নারীরা। মিছিল শেষে এক সমাবেশে মিলিত হন তারা। এসময় উপকূলীয় প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক নারীরা এ সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেন।
বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মো. নূর আলম শেখ, কমলা সরকার, সার্ভিস বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের হাছিব সরদার, চন্দ্রিকা মণ্ডল, রত্না শেখ, তন্বী মণ্ডলসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, আমরা পরিষ্কার এবং নিরাপদ পানির হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা লড়াই করছি পানীয় উপযোগী, মাছের বসবাসের উপযোগী এবং গোসল করার উপযোগী পানির জন্য। পানির আরেক নাম জীবন তাই জরুরি ভিত্তিতে উপকূলের সুপেয় পানির সংকটের সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। পানি সংরক্ষণের অবকাঠামো নির্মাণ এবং পানি সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা করতে না পারলে আমাদের সুপেয় পানির অভাব মিটবে না। ভোর হলেই মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে খাবার পানি নারীকেই সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নারীর শ্রমঘণ্টা।
আরও পড়ুন: শ্যামনগরে সুপেয় পানির সংকট নিরসনে কলস নিয়ে মানববন্ধন
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র থেকে ভূভাগের অনেক ভেতর পর্যন্ত লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। লোকজনকে পানি ও খাবারের সঙ্গে তুলনামূলক বেশি পরিমাণে লবণ গ্রহণ করতে হচ্ছ। নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে। লবণাক্ত এলাকায় গর্ভবতী মায়েদের প্রি-একলেম্পশিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের হার বেড়েছে।
বক্তারা বলেন, যত দিন যাচ্ছে ততই মিঠা পানির উৎস ভরাট, দখল ও দূষণ হচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।
অন্তবর্তীকালীন সরকার মোংলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপদ পানির সার্বজনীন, ন্যায্যতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার জন্য জোর দাবি জানানো হয় এ সমাবেশ থেকে।
সমাবেশের আগে পশুর নদীর পাড়ে খালি কলস হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন উপকূলীয় নারীরা। সঙ্গে ছিল শিশুরাও।
উল্লেখ্য, এখানকার ৭৩ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের উপকূলের ১৯ জেলার তিন কোটি মানুষ আধারযোগ্য পানি সংগ্রহ করতে পারছেন না। দেড় কোটি মানুষ ভূগর্ভস্থ লবণাক্ত পানি পানে বাধ্য হচ্ছেন। উপকূলীয় অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।