রোববার (৪ মে) রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফয়জুল আজীম নোমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত জাকির হোসেন জিদানসহ তার পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত জিদান লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের মাস্টার কলোনি এলাকার ইব্রাহিম হোসেন বাবুলের ছেলে। মামলার অপর আসামিরা হলেন, জিদানের মা কুলসুম বেগম, দুই ভাই রাকিব ও সাকিব ও তাদের বোন নুর নাহার।
আরও পড়ুন: কেন বাড়ছে ধর্ষণ-আত্মহত্যা?
পুলিশ ও মামলা এজহার সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছর পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে জিদানের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে জিদান ওই কলেজ ছাত্রীকে পালিয়ে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে গত ৮ মাস আগে দুই দফা কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ওই সময় হোটেলের রুমে অন্তরঙ্গ ছবিও তোলা হয়। পরে ভিকটিম তরুণী জিদানকে বিয়ের চাপ দিলে কাগজপত্র ঠিক না থাকাসহ বিভিন্ন অজুহাতে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
পরে আবারও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলতি বছরের ঈদুল ফিতরের ৭ দিন পর ওই কলেজ ছাত্রীকে কক্সবাজার নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে ৪ দিন-রাত্রি যাপন করেন জিদান। সেখানেও তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।
এদিকে গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে জিদান ওই তরুণীকে ফের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবারও ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সদর উপজেলার মান্দারি ইউনিয়নের রতনপুর এলাকার মোস্তাফা মিয়ার বাড়ির কামালের একটি ভাড়াবাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাতভর তরুণীকে ধর্ষণ করেন তিনি। পরে সকালে বিয়ের কথা বললে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য ভিকটিম তরুণীকে হুমকিধমকি দেয় জিদান। পরে উপায়ান্তর না পেয়ে বিষয়টি ভিকটিম কলেজ ছাত্রী তার পরিবারকে জানায়।
এ ঘটনায় গত ৩ মে ভিকটিম ছাত্রীর বড় বোন নাজমুন নাহার বিয়ের দাবি নিয়ে অভিযুক্ত জিদানের বাড়িতে যায়। পরে জিদানের পরিবারের লোকজন প্রথমে অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন তারা।
আরও পড়ুন: এপ্রিলে ধর্ষণের শিকার ১১১ নারী ও মেয়েশিশু, হত্যা ৭০: মহিলা পরিষদ
কলেজ ছাত্রীর বড় বোন নাজমুন নাহার অভিযোগ করে বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে জিদান ৮ মাসে আমার ছোট বোনকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করেছে। বিয়ের কথা বললেই হুমকি দেয়। তার পরিবারের লোকজনও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ দিকে মোবাইল ফোনে জাকির হোসেন জিদান ভিকটিম মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দুইজনের সম্মতিতেই আমরা কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছি। তবে তাকে ধর্ষণের বিষয়টি সঠিক নয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মেয়েটির সঙ্গে আরও একাধিক ছেলের সম্পর্ক রয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফয়জুল আজীম বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে শনিবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। মামলায় আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
]]>