বিমান বাহিনীর ৯৭০ কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি দিচ্ছে ইসরাইল, কেন?

১ সপ্তাহে আগে
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের চলমান সামরিক আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়েছে দেশটির বিমান বাহিনীর অন্তত ৯৭০ জন কর্মী। এতে ক্ষুব্ধ ইসরাইলি বিমান বাহিনীর কমান্ডাররা এসব কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন। ইসরাইলি দৈনিক হারেৎজের বরাতে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটেনভিত্তিক মিডল ইস্ট মনিটর।

গাজায় গত প্রায় দেড় বছর ধরে নজিরবিহীন সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো উপত্যকা। 

 

হারেৎজের প্রতিবেদন মতে, সম্প্রতি ইসরাইলি বিমান বাহিনীর প্রায় ৯৭০ জন কর্মী গাজায় সামরিক আগ্রাসনের বিরোধিতা করে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে তারা পদত্যাগের হুমকি দেননি। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে নিয়মিত স্টাফদের পাশাপাশি রিজার্ভ পাইলট ও সেনা সদস্যও রয়েছেন।

 

বিমান বাহিনীর কমান্ডাররা এখন এসব কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি দিচ্ছেন। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যদি গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে লেখা চিঠি থেকে তাদের স্বাক্ষর প্রত্যাহার না করেন, তাহলে বহিষ্কার করা হবে।

 

হারেৎজ জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা চিঠির স্বাক্ষরকারীদের ফোন করে করে গাজা যুদ্ধ নিয়ে তাদের আপত্তি প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছেন। কমান্ডাররা বিমান বাহিনীর কর্মীদের বলছেন, তারা যদি কর্তৃপক্ষে নির্দেশ মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানায় তবে তাদের বরখাস্ত করা হবে।

 

আরও পড়ুন: গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ ‘লক্ষ্যবস্তুতে’ ইসরাইলের বিমান হামলা

 

তবে কমান্ডারদের এই হুমকি কাজে আসছে না। হারেৎজের মতে, হুমকির পর এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ জন স্বাক্ষরকারী চিঠি থেকে নাম প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছেন। অন্যদিকে নতুন করে আরও ৮ জন কর্মী চিঠিতে নাম দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

চিঠি স্বাক্ষরকারী বিমান বাহিনীর অফিসার ও পাইলটরা বলছেন, ‘গাজায় সামরিক আগ্রাসন চালানো হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থে। এর সঙ্গে ইসরাইলের নিরাপত্তার কোনো সম্পর্ক নেই।’ গত প্রায় দেড় বছর ধরে একই কথা বলে আসছেন ইসরাইলি বিরোধী দলের নেতারাও।

 

তারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন যে, গাজার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের উদ্দেশ্য হলো প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ক্ষমতায় টিকে থাকা। ইসরাইলের নিরাপত্তার সাথে এই যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই।

 

তবে বিরোধী দলের কথা পাত্তা না দিলেও বিমান বাহিনীর শত শত কর্মীর গাজা যুদ্ধের বিরোধিতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসরাইলি সেনা কমান্ডাররা। হারেৎজের প্রতিবেদন মতে, বহিষ্কারের হুমকির পর ইসরাইলের বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার মেজর জেনারেল তোমের বার চিঠির স্বাক্ষকরকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন।

 

আরও পড়ুন: গাজায় যেভাবে ডিজিটাল অস্ত্র ব্যবহার করছে ইসরাইল

 

তবে বৈঠকে রিজার্ভ অফিসাররা কমান্ডার বারের চিঠি স্বাক্ষরকারী কর্মীদের অপসারণের হুমকির তীব্র সমালোচনা করেন। এই হুমকিকে একটি ‘আইনি ও নৈতিক সীমালঙ্ঘন’ বলেও অভিহিত করেন তারা।

 

জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে শীর্ষ কমান্ডার বলেছেন, এটি কোনো শাস্তিমূলক নয়, বরং যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। কারণ যারা স্বাক্ষর করেছেন, তারা অভিযানে তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করবেন কি না তা নিয়ে বাহিনী সন্দিহান এবং যদি তারা দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করেন, তাহলে জিম্মি মুক্তির ব্যাপারটি বাধাগ্রস্ত হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন