বিদায়বেলায় চোখ ভিজল অধ্যাপক আমির হোসেনের, কাঁদলেন শিক্ষার্থীরাও

৩ দিন আগে
শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসরে গেলেন ময়মনসিংহের ঐহিত্যবাহী বিদ্যাপিঠ আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের সদ্য সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও গফরগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আমির হোসেন।

দীর্ঘ সাড়ে ৩১ বছর যুক্ত ছিলেন শিক্ষা ক্যাডারে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ বছরই কাটিয়েছেন আনন্দ মোহন কলেজে। দীর্ঘ এই সময়ে প্রীতি আর ভালোবাসায় সবার সঙ্গে গড়ে ওঠে তার নিবিড় এক সম্পর্ক। আর তাইতো বিদায়ের দিনে হাজির হন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী-সহকর্মীসহ সমাজের নানা পেশার মানুষ।


শনিবার এই গুণী শিক্ষকের অবসরে নগরের অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করে আনন্দমোহন কলেজের গণিত বিভাগ। দিনব্যাপী এ আয়োজনে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।


এর আগে, সকালে শোভাযাত্রা নিয়ে কলেজ চত্বর থেকে টাউনহল প্রাঙ্গণে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে ফুল ছিটিয়ে বিদায়ী শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানান। তিনিও সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মিলনায়তনের মঞ্চে ছিলেন অধ্যাপক আমির হোসেনের পরিবার ও আনন্দমোহন কলেজের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোশাররফ হোসেন। 

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি ১৯ দিন

বিদায়ের মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলা হয়। একপর্যায়ে মঞ্চে শুরু হয় তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা। সবার কণ্ঠে তার ন্যায়নিষ্ঠ ও বন্ধুসুলভ শিক্ষকতার কথা উঠে আসে। স্মৃতিচারণার মুহূর্তে কেউ কেউ আবেগে আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। মঞ্চ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা স্মারক। দিনশেষে অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদায় নেন অধ্যাপক আমির হোসেন।


শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমির স্যারের কাছ থেকেই জীবনের ব্রতগুলো শেখা। সব সময় সন্তানের মতো স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছেন আমাদের। স্যারকে আর ক্লাসে পাব না ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। সব কিছু খুব মিস করব। এমন শিক্ষকই আমাদের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’


বিদায়ী শিক্ষকের কর্মজীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন সাবেক ছাত্র ও সহকর্মী আজহারুল ইসলাম। 


তিনি বলেন, ‘কখনও আমাদের সঙ্গে স্যারসুলভ আচরণ করেননি। তিনি ছিলেন সবার বন্ধু-অভিভাবক। নেতৃত্বগুণ আর শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ যে কাউকেই সহজেই আপন করে নেওয়ার এক বিরাট ক্ষমতা রয়েছে স্যারের মধ্যে।’


অবসরে যাওয়া অধ্যাপক আমির হোসেন বলেন, ‘আমার অসংখ্য শিক্ষার্থী আজ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে ভালো ভালো পজিশনে চাকরি করছে। বিদায়ের দিনে তাদের নিয়ে আমি আজ গর্বিত। তারা যেন সমাজের জন্য, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে। এ ব্যাপারে তারা যেন সর্বদা সজাগ থাকে এটাই প্রত্যাশা। সেইসঙ্গে শিক্ষকদের বলব- হৃদয় দিয়ে শিক্ষর্থীদের যেন ধারণ করে।’
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন