বাসের রেষারেষি থামাতে আলাদা লেনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

১ সপ্তাহে আগে
রাজধানীর সড়কে বাসের রেষারেষি নিত্যদিনের চিত্র। যাত্রী উঠানোর এমন অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণ যাত্রীসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল গাড়ির সংখ্যা। যদিও রাস্তার তুলনায় সেই সংখ্যাটা কিন্তু বেশি। যা কিনা বিশ্বের সবচেয়ে যানজটপ্রবণ শহরগুলোর একটিতে পরিণত করেছে ঢাকাকে। বাস নিয়ন্ত্রণে না এনে মেট্রোরেল আর ঢাকা বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) মতো বড় বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও এর সুফল পাবেন না গণপরিবহন ব্যবহারকারী সিংহভাগ মানুষ।

সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট ইনডেক্স বলছে, ঢাকার অর্ধেকের বেশি মানুষ গণপরিবহনের প্রাপ্যতা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। অসন্তুষ্ট সময়ানুবর্তিতা নিয়েও। বাস রুট রেশোনালাইজেশনের মাধ্যমে ১০ মিনিট পরপর বাস চালানোর নিয়ম রাখা হলেও সেটাও দেখেনি আলোর মুখ।

 

যাত্রীরা বলছেন, সড়কে বাংলাদেশের মানুষের যেভাবে সময় অপচয় হয়- এমনটা কোনো দেশে ঘটে না। অফিসগামী যাত্রীদের বাধ্য হয়ে এমন পরিস্থিতিতে পরিবহনে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যেখানে সেখানে না থামালে যানজট আর দুর্ঘটনা হতো কম।  

 

পুলিশ বলছে, যানবাহনকে মামলা করাটাই সমাধান নয়, সচেতনতাই ফেরাতে পারে সড়কের শৃঙ্খলা।

 

বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে, ঢাকায় ২০০৭ সালে একটি গাড়ির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২১ কিলোমিটার। এখন সেটা কমতে কমতে নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটারে। এ অবস্থায় প্রতি কর্মঘণ্টার যে আর্থিক অপচয়, তা যদি হিসাব করা হয় বাৎসরিক ভাবে সে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।      

 

নির্ভরযোগ্য বাস নেটওয়ার্ক যাত্রীদের সন্তুষ্টির মাত্রা বাড়বে স্বীকার করে নিজেদের জায়গা থেকে বাস মালিক এবং চালকদের সঙ্গে নিয়ে সরকারের পাশে থাকার কথা জানাচ্ছে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন,

সড়কে টাইমিং একটা বিষয়। আবার গণপরিবহনের মালিকদের অনীহা। কারণ এটা দীর্ঘদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য আমরা উদ্যোগী হচ্ছি।

 

আরও পড়ুন: বাস রুট রেশনালাইজেশনের ‘শেষ ভরসা’ অন্তর্বর্তী সরকার

 

আসছে ফেব্রুয়ারি থেকেই ঢাকার অন্তত ৯টি রুটে সময়সূচি অনুযায়ী বাস পরিচালনা শুরুর কথা বলছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

 

বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন,

আগামী মাসেই ৯টি রুটে সময়সূচি মেনে বাস চালু করে দেব। যখন এটা চালু হবে কোনো প্রতিযোগিতা থাকবে না। সিরিয়াল মেনে বাস পরিচালনা করা হবে।

 

এদিকে নজরদারি নিশ্চিতে দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর স্বল্পব্যয়ের দীর্ঘমেয়াদি ফলপ্রসূ প্রকল্প হাতে নেয়ার পরামর্শ পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম হাদিউজ্জামানের। সেইসঙ্গে বাসকে সময়সূচির মধ্যে আনতে বাস নির্ভর আলাদা লেনের ব্যবস্থা করারও তাগিদ তার।

 

এই যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, যেখানে দুই বা তার চেয়ে বেশি লেন আছে, সেখানে বাসের জন্য আলাদা লেন করে দিতে হবে। যেসব গণপরিবহনে যাত্রী সংখ্যা বেশি তারাই শুধু লেনটিতে চলতে পারবে-এমন ব্যবস্থা করা দরকার। স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবস্থা করা গেলে লেন ছাড়া চলাচলকারী গাড়িকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে।    

 

দুর্ভোগ-ভোগান্তিতে ভরা রাজধানীর গণপরিবহন সংস্কারে তাই নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভূমিকা রাখার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন