বালাইনাশক আমদানিতে একক উৎসের গ্যাঁড়াকলে ব্যবসায়ীরা

২ সপ্তাহ আগে
দেশে কীটনাশকের চাহিদা মেটাতে ৭১ শতাংশই আমদানি করতে হয়। আর তা করতে গিয়ে একক দেশ বা একক উৎসের গ্যাঁড়াকলে পড়ছেন আমদানিকারকরা। বাজারে চলা প্রতিযোগিতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো বালাইনাশক কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি পিটাক-এর করা এমন নিয়মে খরচ বাড়ছে কৃষকদের। আবার নিবন্ধিত সোর্সের বাইরে থেকে আমদানি করলেই জরিমানা গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এবার তাই সোর্স উন্মুক্ত করার পথে স্বয়ং পিটাক।

কৃষিপণ্য উৎপাদনে বালাইনাশক দিলে খরচ বাড়ে; আর না দিলে ফলন কমে। তবে পণ্যের দাম বাড়লেও ভালো ফলনের আশায় বরাবরই কীটনাশকের ওপর ভরসা রাখেন কৃষকরা। যার প্রমাণ মেলে পরিসংখ্যানেও।

 

কৃষি বিভাগ ও আমদানিকারকদের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে দেশে বালাইনাশক ব্যবহার হয়েছে ৩৯ হাজার মেট্রিক টনের বেশি। ৫ বছর আগে যার পরিমাণ ছিল ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার মেট্রিক টনের মতো। দেশে দানাদার বাদে তরল ও গুঁড়া বালাইনাশকের প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। কৃষকরা বলেন, ক্ষেতে পোকার আক্রমণ হলে কীটনাশক ব্যবহার ছাড়া উপায় নেই; তা নাহলে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। তবে এর দাম বেশ চড়া।

 

এ বালাইনাশক আমদানি করতে গিয়ে বাজার প্রতিযোগিতার গলা টিপে রাখা একক উৎসে জিম্মি হয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ, পিটাক-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন একটি দেশের একটি কোম্পানি বা উৎস থেকে তা আমদানি করা যাবে। যদিও বালাইনাশক আইন, ২০১৮ তে এমন কোন শর্ত নেই।

 

আরও পড়ুন: কীটনাশকের বাজারে কারসাজি, দাম বাড়ে সবজির!

 

তবে একক উৎসের শর্ত মানছে না খোদ পিটাক-এর সদস্য প্রতিষ্ঠানই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য, বালাইনাশক আমদানিকারক একটি কোম্পানি জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৬টি পণ্য মোট ২১ বার একক উৎসের শর্ত ভঙ্গ করে আমদানি করেছে। ২০২৩ সালে ৯টি পণ্য ২৬ বার ও ২০২২ সালে ১০টি পণ্য কিনেছে মোট ৫৬ বার।

 

বাংলাদেশ ক্রপ প্রটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. সায়েদুজ্জমান বলেন, এটি দীর্ঘদিনের জটিলতা। এটি সমাধানে কাজ চলছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা নেয়া হচ্ছে।

 

কৃষকদের ন্যায্যমূল্যে বালাইনাশক সরবরাহ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টিতে উৎস উন্মুক্তকরণের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরাও। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। যে উৎস থেকে কম দামে ভালো বালাইনাশক পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই কিনতে হবে।

 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশে ব্যবসা করা ৮ টি বহুজাতিক ও স্থানীয় ৬৯৩টি কোম্পানি বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বালাইনাশক আমদানি করেছে। স্থানীয় উৎপাদন মিলিয়ে বছরে দেশে কীটনাশকের বাজার সাত হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন