বাজার ধরতে প্রস্তুত গদখালীর ফুল চাষিরা, তিন কোটি টাকা ব্যবসার আশা

৩ সপ্তাহ আগে
মৌসুমের প্রথম বাজার ধরতে প্রস্তুত যশোরের গদখালীর ফুল চাষিরা। মাঠে মাঠে বিশেষ পরিচর্যায় সংরক্ষণ করা হয়েছে গাঁদা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা ও জারবেরাসহ নানা ধরনের ফুল। এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের ফুলের দাম। এ দাম অব্যাহত থাকলে বিজয় দিবসকে ঘিরে তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা।

ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীর ফুল চাষিদের জন্য আসন্ন বিজয় দিবস মৌসুমের প্রথম অনুষ্ঠান। এ বাজার ধরতে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন চাষিরা। এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে বিলম্বে চাষাবাদ শুরু হলেও চাষিদের নিবিড় পরিচর্যায় মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, জারবেরা ও গ্লাডিওলাসসহ নানা ধরনের ফুল। গাছে গাঁদা ফুল ধরে রাখতে চলছে ভিটামিন ও বালাইনাশক স্প্রে।

 

গোলাপে পরানো হয়েছে বিশেষ ক্যাপ। এর মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের ফুলের দামও। বিজয় দিবসের আগে এ দাম আরো বাড়বে বলে আশা চাষিদের। ফলে তারা  লাভবান হতে পারবেন।

 

আরও পড়ুন: বিজয় দিবস ও নিউ ইয়ার / বাজার ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গদখালীর ফুলচাষিরা

 

আনোয়ার হোসেন নামে এক ফুলচাষি বলেন, ‘চলতি মৌসুমের প্রথম বড় অনুষ্ঠান ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবস। এ বাজার ধরতে আমরা প্রস্তুত। গাছে গাছে নতুন ফুল। ফুলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ বাজারে অন্তত ৫০ হাজার টাকার গোলাপ ফুল বিক্রির টার্গেট রয়েছে।’

 

মঞ্জুর হোসেন নামে আরেক ফুলচাষি বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টিপাত দীর্ঘায়িত হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে এ বছর শীতকালীন ফুল চাষ বিলম্বিত হয়েছে। কিছু সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে ফুলের চাহিদা বাড়ে। সে কারণে আমরা বিশেষ পরিচর্যায় উদ্যোগ গ্রহণ করি। আসন্ন বিজয় দিবসকে ঘিরে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বিলম্বে চাষাবাদের কারণে ফুলের উৎপাদন কম হলেও দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় লাভের আশা করছি।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে গোলাপ ফুল প্রতি পিস ৫ টাকা, জারবেরা ১৪ টাকা, গ্লাডিওলাস ৮ টাকা ও চন্দ্রমল্লিকা দুই টাকা এবং গাঁদা ফুল প্রতি হাজার পাঁচশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিজয় দিবসের আগে এ দাম আরো বাড়বে। বাজার এভাবে অব্যাহত থাকলে আমরা লাভবান হতে পারব।’

 

গোলাপে পরানো হয়েছে বিশেষ ক্যাপ। ছবি: সময় সংবাদ

 

আজিজুর রহমান নামে অপর এক ফুল চাষি বলেন, মাঠের পর মাঠ শোভা পাচ্ছে ফুল। বিশেষ করে গোলাপ ও গাঁদা ফুল সংরক্ষণে সব চাষি উদ্যোগ নিয়েছেন। গোলাপে পরানো হয়েছে বিশেষ ক্যাপ। আর গাঁদা ফুলে চলছে ভিটামিন ও বালাইনাশকের প্রয়োগ। বিজয় দিবসের দু-তিনদিন আগে থেকে ফুল বাজারে উঠানো হবে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৭ বিঘা জমিতে গ্লাডিওলাস, এক বিঘা জমিতে গোলাপ ও এক বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল রয়েছে। এসব ক্ষেতের ফুল ট্রিটমেন্ট দিয়ে রাখা হয়েছে। আশা করছি, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানকে ঘিরে অন্তত ৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারব।’

 

আরও পড়ুন: বিশেষ তিন দিবসে শতকোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট যশোরে

 

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার্স সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, বিজয় দিবসে মূলত গাঁদা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, কামিনী পাতা ও ঝাউপাতা বেশি বিক্রি হয়। এর সাথে রজনীগন্ধা ও গ্লাডিওলাসও বিক্রি হয়। এ বছর ফুলের দাম বেশ ঊর্ধ্বমুখী। বিজয় দিবসকে ঘিরে গদখালীর চাষিরা অন্তত তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবে। যার মাধ্যমে অতিবৃষ্টির ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।

 

ফুল একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা পণ্য উল্লেখ করে আব্দুর রহিম আরও বলেন, প্লাস্টিক ফুলের আমদানির কারণে ফুলচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে প্লাস্টিক ফুলের ব্যবহার ও তা আমদানি বন্ধ করতে হবে।

 

উল্লেখ্য, কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, যশোরের প্রায় ৬ হাজার চাষি দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ১১ ধরনের ফুলের চাষ করছেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন