বাগেরহাটে যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ

১ সপ্তাহে আগে
যৌতুক দিতে না পারায় দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বাগেরহাটের এক গৃহবধূ। যৌতুকলোভী স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে অবশেষে ন্যায়বিচারের আশায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামী সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। আদালত শনিবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন। 


নির্যাতনের ভয়াবহ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে গৃহবধূ ঐশী জানান, গত ২০২৪ সালের ৪ মার্চ পারিবারিকভাবে সোহেল রানার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরই তার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ভেঙে যায়। দুবাই থেকে ফিরে এসে স্বামী সোহেল ব্যবসার জন্য ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ঐশীর সেই সাধ্য না থাকায় লোন নিয়ে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেয় সোহেল রানাকে। এরপর বাকি টাকা না দেয়ায়  শুরু হয় অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। শ্বশুর, শাশুড়িসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও যোগ দেয় সেই নির্যাতনে। আট মাস আগে মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। স্থানীয়ভাবে বহুবার সালিশ বৈঠক করেও মেলেনি কোনো সুরাহা। উল্টো, সোহেল ও তার পরিবারের লোকজন ঐশীর পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে আসছে। তাই বাধ্য হয়েই আদালতের কাছে এসেছেন তিনি, একটুখানি ন্যায়বিচারের আশায়।

আরও পড়ুন: টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঐশীর মা হামিদা আক্তার নুপুর জানান, বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ের ওপর যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের সাধ্যমতো ৫০ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকার জন্য তার মেয়েকে দিনের পর দিন কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।


সারভাইভারস প্যাথ নামের সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুনজিয়া স্নিগ্ধা মুন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঐশীর ওপর নির্যাতন চলছে। পারিবারিক সমঝোতার চেষ্টা করেও কোনো ফল না হওয়ায় মেয়েটি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। 


তিনি আশা প্রকাশ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অসহায় ঐশীর পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। 


লিগ্যাল এইডের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম বলেন, তারা ঐশীর পক্ষে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং আগামী শনিবার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, ঐশী ন্যায়বিচার পাবেন।


তবে অভিযুক্ত সোহেল রানার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মেজ ভাই হাসান খানের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন