‘বাংলাদেশে পেস বোলিংয়ে বিপ্লব শুরু হয়েছে’, তরুণদের নিয়ে মুগ্ধ তালহা জুবায়ের

৩ সপ্তাহ আগে
পুরুষ জাতীয় দল বাদে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রায় সবগুলো সেকশনেই কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা আছে তালহা জুবায়েরের। সম্প্রতি কোচিংয়ের জন্য ডাক পেয়েছেন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন থেকে। গত এক মাস থেকে কাজ করছেন সেখানে। মুঠোফোনে সেখান থেকেই জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে ভবিষ্যত পেস শক্তি নিয়ে।

জুবায়েরের মতে, ২০১৭-১৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশে পেস বোলিংয়ে একটা বিপ্লব শুরু হয়েছে। বয়সভিত্তিক দল থেকে অনেক পেসার উঠে আসছে। এসব পেসারদের মধ্যে তাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছেন রোহনাত দৌলা বর্ষণ, মুশফিক হাসান, রিপন মণ্ডল, আল ফাহাদ, ইকবাল হোসেন ইমন। এখান থেকেই ভবিষ্যতের তারকা উঠে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।    


অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে লম্বা সময় কাজ করেছেন তালহা জুবায়ের। রিপন, ফাহাদ, ইমন, মুশফিক এবং বর্ষণ- সবাই-ই উঠে এসেছেন সেখান থেকেই। তাই বেশিরভাগ খেলোয়াড়কেই ভালোভাবে জানেন তিনি। জানালেন সবার সমস্যা এবং শক্তির জায়গাও।


বাংলাদেশের পাইপলাইনে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা পেসার কারা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'বর্ষণকে আমার রেডি পেসার মনে হয়েছে, স্মার্ট বোলার। কিন্তু ডিসিপ্লিন নেই। ঘুরে বেড়াচ্ছে, ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করছে। এটা কি আসলে! মুশফিক ভালো করবে। রিপন মন্ডল ভালো কিন্তু আরও মাথা ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ এর ইমন এবং ফাহাদও ভালো অবস্থানে আছে।  


ইকবাল ইমন এবং আল ফাহাদ এখন অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন। সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে দলের জয়ে বড় অবদান ছিল দুজনের। আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজেরও দলে আছেন তারা। দুজনেরই প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। ইমন বিপিএলেও খেলেছেন গত আসরে। ৭ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৭ উইকেট।


আরও পড়ুন: আফগানিস্তান সিরিজের জন্য বাংলাদেশের যুব দল ঘোষণা 

২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে নজর কেড়েছিলেন রিপন মণ্ডল। ওই আসরের পরপরই প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয় তার। ডাক পান বিপিএলেও। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ 'এ' দল এবং ইমার্জিং দলের হয়েও কয়েকটি সিরিজ খেলেছেন তিনি। জাতীয় দলে ডাক পেলেও জার্সি গায়ে জড়ানো হয়নি এখনও। অনূর্ধ্ব-১৯ এ রিপনের ব্যাচমেট মুশফিক। ঘরোয়া লিগগুলোর নিয়মিত পারফর্মার ডানহাতি এই পেসার। বিপিএলে ২ আসরে ৯ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। তবে ইনজুরি প্রবণতার কারণে অনেকটা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাকে। নীলফামারির ছেলে বর্ষণ গত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বল হাতে ঝড় তুলেছিলেন। আসর শেষের পরপর বিপিএলেও সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে আর তেমন একটা সুযোগ পাননি।


এদের বাইরে মারুফ মৃধা এবং নাহিদ রানাকে নিয়ে আশা দেখছেন জুবায়ের। তবে দুজনের বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা আছে বলে মনে করেন তিনি, 'মারুফ মৃধা যদি আরও পেস জেনারেট করতে পারে তাহলে ভালো করবে। এই গতিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকা মুশকিল। নতুন বলের ওপর নির্ভর করলেই হবে না। বল পুরনো হয়ে গেলেও তো ভালো করতে হবে। নতুন বল থাকে কয় ওভার! ইনসুইং, আউট সুইং এবং রিভার্স- সবকিছুই শিখতে হবে।  


নাহিদ রানার বিষয়ে বলেন, 'নাহিদ রানাকে নিয়ে চিন্তা ভালো জায়গায় বল করা। সবাই মনে করে ১৫০ গতিতে বল করাই মূখ্য। আমি বরাবরই বলেছি ওকে ১৫০ গতিতে বল করলেই হবে না, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যদি আউট করতে না পারো বা ভালো জায়গায় বল না করতে পারো তাহলে কিছু হবে না। ওর ওয়ার্ক এথিক ভালো। কিন্তু আরও ডিটেইলে কাজ করা উচিত ওকে নিয়ে। আমার আন্ডারে যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৯ এ ছিল, আমাকে যদি ওর দায়িত্ব দেয় বিসিবি, যদিও দেবে কিনা জানি না। আমি এগুলো দেখব। ইনজুরির বিষয়গুলোও খেয়াল রাখব।'


পেসার উঠে আসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কথা বলতে গিয়ে জুবায়ের বলেন, 'শুধু পেস বোলার উঠে আসলে তো হবে না। তাদেরকে পেস বোলিংয়ের উইকেট দিতে হবে। এছাড়া আমরা রোজার মাঝে গরমের সময় খেলি প্রিমিয়ার লিগ। এখানে পেস বোলাররা আশা হারিয়ে ফেলে কারণ এটা তো কষ্টের কাজ। এখানেই তো তাদের ডিমোটিভেট করা হয়। কারণ ম্যাচের দিন রোজা না রাখলেও আগের দিন রাখে অনেকেই। এগুলো সমস্যা।'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন