বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছেই, বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ

৩ সপ্তাহ আগে
শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার পরও চীনে রফতানি বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ। বেড়েই চলেছে বাণিজ্য ঘাটতি। ব্যবধান কমিয়ে আনতে প্রয়োজন রফতানি বৈচিত্র্যেকরণ। এজন্য চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আনার পরামর্শ ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফরে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ তাদের।

আমদানি করা চীনা পণ্যের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল বাংলাদেশের অর্থনীতি। গত অর্থবছরে চীন থেকে আমদানি ব্যয় ছাড়িয়েছে সাড়ে ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ডলার। যা মোট আমদানি ব্যয়ের ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। বিপরীতে দেশটিতে রফতানি হয়েছে মাত্র ৪১ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য। যা মোট রফতানির কেবল ১ শতাংশ।

 

বড় অঙ্কের এই বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশের পাশেও দাঁড়িয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ চীন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় দেশটি। ২০২২ সালে এসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যকে দেয়া হয় এই সুবিধা।

 

আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমছে না কেন?

 

পরের বছর যুক্ত হয় আরও ৩৮৩টি পণ্য। ২০২৩'র আগস্টে নতুন করে ১ শতাংশ; আর গত ডিসেম্বর থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শতভাগ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীনা সরকার।

 

এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার এবারের চীন সফরে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাস্তবায়নে দর কষাকষির তাগিদ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

 

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশ করানোর জন্য আরও সচেষ্ট হতে হবে। পাশাপাশি দেশে বাড়াতে হবে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ। এতে কমবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। প্রধান উপদেষ্টার এবারের চীন সফরে এই বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেয়া দরকার।

 

বাংলাদেশে শীর্ষ বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে কখনো দ্বিতীয়, আবার কখনো তৃতীয় অবস্থানে থাকে চীন। ২০২১-২২ অর্থবছরের পর বিনিয়োগের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি। তাই দেশটিতে রফতানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

 

আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তী সরকার

 

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রেড বাস্কেটটিকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে হবে। এদিকে বেশি নজর দিতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা, যাতে রফতানিযোগ্য পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়।

 

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও ভালো করতে হবে। বিশেষ করে দেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হলে, সেই বিনিয়োগের ওপর ভিত্তি করে রফতানি পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে।

 

চীন আমদানি করে এমন পণ্যের উৎপাদনে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন এই অর্থনীতিবিদ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন