বাঁশবাজারের খাস জায়গার বন্দোবস্ত বাতিলের ঘোষণা

৩ দিন আগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী আনন্দবাজার সংলগ্ন পুরাতন বাঁশবাজারের খাস জায়গার বন্দোবস্ত বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম।

 

বন্দোবস্ত ও বিরোধের সূত্রপাত

 

সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আনন্দবাজার সংলগ্ন পুরোনো বাঁশবাজার এলাকায় ১ নম্বর খাস খতিয়ানের অধীনে হাট-বাজার শ্রেণিভুক্ত প্রায় ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ জায়গা ৩৩ জনের নামে বন্দোবস্ত দেয়া হয়

 

এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। গত ২১ অক্টোবর ব্যবসায়ীরা উপজেলা প্রশাসনের সাইনবোর্ড অপসারণ করে মানববন্ধন করেন এবং বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি জানান।

 

এ ঘটনায় সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. মফিজুল কবীর বাদী হয়ে স্থানীয় কয়েকজনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন ২২ অক্টোবর জায়গার সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে ইউএনও সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে থাকা টিমের ওপর হামলা হয়। এতে উপজেলা কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল ইসলামসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।

 

প্রশাসনের অভিযান ও মামলা

 

পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে আনন্দবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে।
সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় পরদিন ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন, যেখানে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০-১১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

 

গ্রেফতার ও ধর্মঘট

 

গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ব্যবসায়ী নেতা জহিরুল হককে গ্রেফতার করে। এর প্রতিবাদে আনন্দবাজার, লাখি বাজার, সড়ক বাজার, টানবাজার ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট পালন করেন। দিনভর চলে দোকান বন্ধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি।

 

বৈঠক ও প্রশাসকের ঘোষণা

 

ঘটনাবহুল পরিস্থিতির পর সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা জামায়াতের আমির মোবারক হোসেন আকন্দ, এনসিপি সমন্বয়ক আজিজুর রহমান লিমনসহ ব্যবসায়ী নেতারা।

 

সভায় জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম ঘোষণা দেন,

 

পুরানো বাঁশবাজারের বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে। তবে জায়গাটি সরকারি খাস সম্পত্তি হিসেবে প্রশাসনের দখলেই থাকবে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হবে।

 

তিনি জানান, জায়গাটির ভবিষ্যৎ ব্যবহারের জন্য পৌরসভা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি, গণপূর্ত ও বিআরটিএ–এই পাঁচটি দফতরকে সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখানে ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণের পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন