চরম চিকিৎসক সংকটে রুগ্ন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কোনো চিকিৎসক না থাকায় গত এক মাস উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রাহাত হোসেন একাই ইনডোর ও আউটডোর সেবা দিয়েছেন। তবে গত সপ্তাহে দুজন মেডিকেল অফিসার যোগদান করায় মুমূর্ষু অবস্থা থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
জানা যায়, ১৫ চিকিৎসকের মধ্যে বর্তমানে আছেন মাত্র ৩ জন। আর ২৫ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৯ জন। টেকনেশিয়ানের অভাবে বন্ধ আছে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এতে চিকিৎসা ভোগান্তিতে উপজেলার চার লক্ষাধিক মানুষ।
তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রাহাত হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, ‘খুব বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়। আমাদের দুজনকেই দিনরাত ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে কর্মব্যস্ততার মধ্যে থাকতে হয়।’
আরও পড়ুন: নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ সরানোর গুঞ্জন, যা জানাল কর্তৃপক্ষ
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বরগুনার আমতলীর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একই অবস্থা। এখানে ২২ জন চিকিৎসকের আছেন মাত্র চারজন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ‘২২ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু তারপরও কাগজে কলমে ৪ জন চিকিৎসক থাকলেও বাস্তবে মাত্র ২ জন আছি।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন,
জনবল কম থাকার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে কিছু দিন পর পর জানাই। তারাও আশ্বাস দেন এবং চিকিৎসকও পাঠান। কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হয়।
চিকিৎসক সংকটে থুবড়ে আছে ঝালকাঠি সদরসহ সবগুলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রাইভেট চেম্বার বা ক্লিনিকেই চিকিৎসা সেবা কেনাবেচা হয় বলে অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের।
আরও পড়ুন: ঈদে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অধিদফতরের জরুরি নির্দেশনা
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ বলেন,
আমাদের মেডিকেল অফিসারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তারা চিকিৎসক পাঠাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
অচলাবস্থা খোদ বিভাগীয় শহর বরিশালেও। জেলার দশ উপজেলায়ই চিকিৎসক সংকট। নেই সব ধরনের রোগ নির্ণয়ের মেশিনারিজ। এতে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা। কাঙ্ক্ষিত সেবা দেয়া চ্যালেঞ্জ হলেও চেষ্টার ত্রুটি নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন,
নিজেদের মধ্যে রোস্টারের মাধ্যমে পুরো বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা ঠিক রাখার চেষ্টা চলছে। ঈদে সুন্দর স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য পরিকল্পনা নিয়েছি।
বরিশাল বিভাগে এক হাজার ২৫০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও অর্ধেকরও কম পদায়ন রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর।
]]>