ফোরাত নদীতে স্বর্ণের পাহাড় নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী নবীজির

৩ সপ্তাহ আগে
ফোরাত নদী একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঐতিহাসিক নদী। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু ইতিহাস ও ঐতিহ্য। হাদিসে কিয়ামতের আগে সংঘটিত বিভিন্ন বড় ও ছোট আলামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব আলামতের একটি হলো মধ্যপ্রাচ্যের ফোরাত নদী শুকিয়ে গিয়ে স্বর্ণের পাহাড়ের প্রকাশ। সাম্প্রতিক সময়ে ফোরাত নদীর পানি হ্রাস নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে।

ফোরাত নদী। এর আরবি: نهر الفرات বাংলা প্রতিশব্দ: নাহরুল ফুরাত। এটি দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এটি তুরস্ক থেকে উৎপন্ন হয়ে সিরিয়া ও ইরাক অতিক্রম করে দজলা নদীর সঙ্গে মিশে পারস্য উপসাগরে পতিত হয়েছে। প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী তুরস্ক, সিরিয়া, ও ইরাকের জন্য পানির প্রধান উৎস। নদীটি প্রাচীন সভ্যতাগুলোর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। 

 

আরও পড়ুন: রাশমিকাকে নিয়ে বক্তব্য: ক্ষমা চাইলেন আমির হামজা

 

স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ নিয়ে নবীজির ভবিষ্যদ্বাণী

 

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 

 

অচিরেই ফোরাত নদী শুকিয়ে যাবে আর এর থেকে স্বর্ণের পাহাড় উন্মোচিত হবে। যে ব্যক্তি সে সময় উপস্থিত থাকবে, সে যেন এর কিছুই গ্রহণ না করে। (বুখারি: ৭১১৯)

 

আরেকটি হাদিসে আছে, কিয়ামত হবে না যতক্ষণ না ফোরাত নদীতে একটি স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাবে। মানুষ তা নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, এবং প্রতিটি দলের শতকরা নিরানব্বই জন মারা যাবে। তাদের প্রত্যেকেই বলবে, ‘হায়! আমি যদি বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিটি হতাম। (মুসলিম ২৮৯৪)

 

ইসলামি স্কলারদের মতে, এ হাদিসের ভবিষ্যদ্বাণীকে কয়েকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শাইখুল ইসলাম তাকি উসমানি  বলেন, ফোরাত নদীর স্বর্ণের পাহাড় দুই অর্থে হতে পারে ১. নদীর স্থানে একটি পাহাড় উঠবে, যেখানে স্বর্ণের খনি থাকবে।  ২. নদীর তলদেশে প্রচুর স্বর্ণের মজুদ উন্মোচিত হবে (তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, খণ্ড: ১২, পৃষ্ঠা: ২২৮)

 

কিছু গবেষক হাদিসের এই স্বর্ণকে ‘কালো স্বর্ণ’ অর্থাৎ তেলের রূপক অর্থে উল্লেখ করেছেন। তবে মুহাদ্দিসগণ এরূপ ব্যাখ্যার বিরোধিতা করেছেন, কারণ হাদিসে ذهب (যাহাব) শব্দটি সরাসরি স্বর্ণ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: শাম অঞ্চল নিয়ে কোরআন ও হাদিসে যা বলা হয়েছে


সাম্প্রতিক সময় ফোরাত নদীর পানির স্তর উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ ও পানির ব্যবহারের কারণেও হতে পারে। তবে নদীর স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশের আলামত এখনো পূর্ণরূপে দেখা যায়নি। স্কলার ইবনে হাজার আসকালানি (রাহ.) বলেছেন, 

 

এ ঘটনা ইমাম মাহদির আগমনের ঠিক পূর্বে সংঘটিত হবে। (ফাতহুল বারি: ১৩/৯৬)

 

ফোরাত নদী শুকিয়ে স্বর্ণের পাহাড়ের প্রকাশ একটি বড় আলামত হলেও এটি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। মুসলিম উম্মাহর উচিত হাদিসের সঠিক জ্ঞান অর্জন করা ও বিভ্রান্তি এড়িয়ে সৎকর্মে মনোযোগ দেয়া।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন