ফেনী জেনারেল হাসপাতালের সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

৪ সপ্তাহ আগে
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আউট সোর্সিংয়ে জনবল নিয়োগে পি. পি. আর বহির্ভুত টেন্ডার বাতিলের দাবিতে বুধবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করেছে মেসার্স চুমকি এন্টারপ্রাইজ ও মের্সাস শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজ।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, সব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র ও শর্তাবলী ঠিকঠাক থাকার পরও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) ৪টি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে আরাফাত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে বিধিবহির্ভুতভাবে টেন্ডার পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সুপারিশ করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অন্য ঠিকাদাররা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।


তাদের অভিযোগ, যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে স্বেরাচারী কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। বেশিরভাগ আবেদনকারী বিএনপি সমর্থিত। যেহেতু সবাই নিজেরা নিজেরা এখানে সুপার অনিয়ম না করে লটারি দিতে পারতো। মূলত সুপার আবুল খায়ের মিয়াজী সুবিধা নেয়ার জন্য এই অনিয়মগুলো করছেন।


শাহ আমানত ও চুমকি এন্টারপ্রাইজের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ মার্চ ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জন্য আউট সোর্সিংয়ের লোক নিয়োগের দরপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু উক্ত দরপত্রে CPTU এর কোনো নিয়ম মানা হয়নি এবং পি. পি. আর-২০০৮ এর নিয়মবহির্ভূতভাবে দরপত্র গ্রহণ করা হয়। এতে মেসার্স চুমকি এন্টারপ্রাইজ ও শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজঅংশ গ্রহণ করে। পরে জানতে পারি তত্ত্বাবধায়ক তার বিশেষ ক্ষমতাবলে ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে দরপত্রটি বিশেষ একটি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া করছে। বিধি বর্হিভুত দরপত্র বাতিল করে পুনরায় বিধি মোতাবেক আউট সোর্সিং প্রক্রিয়ায় CPTU এর ফরমেট অনুসরণ করে এবং পি. পি. আর-২০০৮ মোতাবেক দরপত্র আহ্বান করার জন্য অনুরোধ করা হয়।

আরও পড়ুন: ঈদে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অধিদফতরের জরুরি নির্দেশনা

বিগত আওয়ামী লীগের আমলেও আবুল খায়ের মিয়াজী এসব করতেন বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদার আবুল খায়ের লিংকন, শহিদুল ইসলাম, বেলাল হোসেন ভিপি বেলাল।


মেসার্স চুমকি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল খায়ের লিংকন বলেন, ‘পি.পি. আর বহির্ভুত দরপত্র বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের দাবি জানাই।’ 


তিনি বলেন, ‘আবুল খায়ের মিয়াজী দীর্ঘদিন ধরে বিগত আওয়ামী লীগের আমল থেকে আউটসোর্সিংয়ের কম লোক দিয়ে কাগজপত্রে বেশি লোক দেখিয়ে ঠিকাদার যে সুবিধা ভোগ করেন তার অর্ধেক তিনি নিয়ে যান। এখনও সেই সুবিধা নেয়ার জন্য অনিয়ম করে লটারি না করে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ ভাগিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া করছেন।’ 


ঢাকার ভ্যারিটাস লিমিটেডের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন ভিপি বেলাল জানান, এখন অনিয়মের সুযোগ নেই। আবেদনকারী ৫টি প্রতিষ্ঠানের সবাই যোগ্য হলে লটারির মাধ্যমেই দিতে হবে। অথচ তত্ত্বাবধায়ক এই নীতিমালা অনুসরণ না করে একটি প্রতিষ্ঠানকে সুপারিশ করেছে।


কামাল উদ্দিন নামে অপর এক প্রতিনিধি জানান, ডা. আবুল খায়ের মিয়াজি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এখানে স্বৈরাচারী কায়দায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করছে। তিনি আরাফাত এন্টারপ্রাইজ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদের নাম প্রস্তাব করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে। 


মেসার্স শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম জানান, সম্পূর্ণ নিয়ম ভঙ্গ করে তত্ত্বাবধায়ক আগের মতো আওয়ামী স্টাইলে প্রতিষ্ঠান বাছাই করেছে। বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ এগুলো মেনে নেয়া যায় না। 


জানতে চাইলে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মেসার্স আরাফাত এন্টারপ্রাইজকে সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। 

আরও পড়ুন: কুমিল্লা ট্রমা হাসপাতাল / অপারেশনে লাগবে ২৫ হাজার টাকা, ৩ লাখ খরচেও বাঁচেনি যুবক

তিনি বলেন, এখানে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সবকিছু বিবেচনা করা হয়েছে। যোগ্য প্রতিষ্ঠানটি দরপত্র পেয়েছে। বাছাই করার জন্য ডিসি অফিসের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও সমাজসেবাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বাছাই করে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। যদিও ডিসি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেট কে ছিলেন তার নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে পারেননি।


উল্লেখ্য, গত ৯ মাস ধরে আউটসোর্সিংয়ের কর্মীরা টাকা না পাওয়ায় অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন