ইউরোপের দেশটির এই ঘোষণায় এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এবার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রশ্নে অনেকটা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সুরেই সুর মিলিয়েছেন এই নারী রাজনীতিক।
মেলোনি বলেছেন, এমন পদক্ষেপ (ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি) ‘হিতে বিপরীত হতে পারে’। কারণ তিনি মনে করেন, এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কোনো ‘অস্তিত্ব নেই’। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এখনও ‘প্রতিষ্ঠিত হয়নি’। এ জন্য তিনি এখনই এর স্বীকৃতির পক্ষে না।
মেলোনির কথায়, ‘আমি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে, কিন্তু এটার রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার আগেই এর স্বীকৃতির পক্ষে নই। গত শুক্রবার ইতালির দৈনিক লা রিপাবলিকা-কে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি তখনই দেয়া উচিত, যখন সেই রাষ্ট্র ইসরাইলকেও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে দুই শতাধিক এমপির চিঠি
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪২টি রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে।
২০২৪ সালে চারটি ক্যারিবীয় দেশ- বাহামাস, বার্বাডোজ, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং ইউরোপের পাঁচটি দেশ- আর্মেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্লোভেনিয়া ও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি শক্তিশালী দেশ তা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি।
সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা জানায় ফ্রান্স। গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক ঘোষণায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, তিনি আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির প্রতি ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। আমি এই বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এটি ঘোষণা করব।’
আরও পড়ুন: হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতি চায় না, মন্তব্য ট্রাম্পের
ইসরাইল ও তার মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ম্যাক্রোঁর সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, এটা ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত’ করার শামিল এবং ইসরাইলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি।
অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘এটা একটা বেপরোয়া সিদ্ধান্ত, যা কেবল হামাসের প্রচারণাকে সহায়তা করবে। এই সিদ্ধান্ত ৭ অক্টোবর হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে চপেটাঘাত।’
তথ্যসূত্র: এএফপি ও রয়টার্স
]]>