ফিরতি যাত্রায় বরিশালবাসীর ঢল, ভোগান্তি এড়াতে প্রশাসনের কড়া নজরদারি

২ সপ্তাহ আগে
দীর্ঘ নয় দিনের ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ। বরিশালসহ আশপাশের জেলা থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের কর্মক্ষেত্রে ফেরার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন তারা। এতে বরিশালের বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোয় উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

রোববার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই বরিশালের কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, নদীবন্দর, রূপাতলী বাস কাউন্টার এবং নগরীর বিভিন্ন টিকিট কাউন্টারে ছিল যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ। কেউ ফিরছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে, কেউ বা একাই কর্মজীবনে নতুন উদ্যমে যোগ দিতে রওনা হয়েছেন।

 

নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের পরিবহন মালিকরা যাত্রী চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত ট্রিপ চালু করেছে। তবে অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, পরিবহনগুলো সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। ঢাকাগামী যাত্রী আল আমিন বলেন, ‘প্রতি বছর ভাড়া একটু বাড়ে বুঝি। কিন্তু এবার ৫০০ টাকার টিকিট এখন ৬৫০ টাকায় নিতে হয়েছে। এটা তো বাড়াবাড়ি।’

 

অন্যদিকে, যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে আজ রোববার বরিশাল নদীবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ১৩টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। যাত্রী রিফাত হোসেন বলেন, ‘লঞ্চের ডেকে জায়গা পাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যাচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রী নিলেও কর্তৃপক্ষ কিছু বলছে না। ভিড় নিয়ে সমস্যা নেই, কিন্তু নিরাপত্তার অভাব ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে।’

 

আরও পড়ুন: গৌরনদীতে শতবছরের বিদ্যালয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উৎসবের আমেজ

 

ঈদের ছুটির এই যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বরিশাল বিআরটিএ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছে। রোববার দুপুরে রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজহারুল ইসলাম।

 

তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে পরিবহনগুলো যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করে এবং ফিটনেসবিহীন যান চলাচল না করতে পারে, সেজন্য আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।’

 

এই অভিযানে হানিফ পরিবহনের একটি বাসকে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত ভাড়া ফিরিয়ে দেয়া হয়।

 

বরিশাল নদীবন্দর ও বাস টার্মিনালে ঢাকা ফেরত যাত্রী চাপ। ছবি: সময় সংবাদ

 

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ফিটনেসবিহীন বাস যাতে সড়কে না চলে, তা নিশ্চিত করছি। সেইসঙ্গে প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারেন।’

 

বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ঠেকাতে প্রতিদিন ম্যাজিস্ট্রেট টিম কাজ করছে। পাশাপাশি নৌবন্দর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’

 

বরিশাল নদীবন্দর উপ-পরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, ‘ঈদের পর ফিরতি যাত্রায় যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বস্তিদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যেন কোনো লঞ্চ ছাড়তে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে আমরা নিয়মিত মাঠে আছি, পাশাপাশি আমাদের সহায়তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।’

 

আরও পড়ুন: পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় প্রবাসীর স্ত্রী, ভিডিও ভাইরাল

 

তিনি আরও বলেন, ‘রোববার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বরিশাল নদীবন্দর থেকে সরাসরি ১১টি এবং ভায়া দুটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। প্রতিটি লঞ্চেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল।’

 

যদিও সরকারি ছুটি এখনো শেষ হয়নি, তবে রোববার ছিল ফিরতি যাত্রার মাঝামাঝি সময়। শনিবার ও রোববার যাত্রীদের চাপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে এবং আগামী সপ্তাহজুড়েই কর্মস্থলমুখী মানুষের ঢল অব্যাহত থাকবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন