ফারাক্কা ফাঁদ: ৫০ বছরে যৌবন হারিয়েছে পদ্মা, গড়াই-বড়ালও মৃতপ্রায়!

১ সপ্তাহে আগে
একসময় উত্তাল ছিল যে পদ্মা, তা এখন ঠাঁই নেয়ার পথে ইতিহাসের পাতায়। নদীর বুকে জেগে উঠেছে বেদনার বালুচর। যে নদী জালের মতো ঘিরে রাখতো সবুজ প্রান্তর। অপার জলের সেই আধার, এখন আর আশার আলো দেখায় না পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের।

পরিবেশ-প্রতিবেশ তো বটেই, ছন্দপতন ঘটিয়েছে মানুষের জীবন-জীবিকায়। ফারাক্কা ব্যারাজের কারণে সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অন্তত ৬ কোটি মানুষ।

 

জেলেরা বলছেন, নদী শুকায় গেছে। জেলেরা আর মাছ মারছেন না। আগে প্রতিদিন ১০-২০ কেজি মাছ পাওয়া যেত। আর এখন ৬ কেজি মাছ পাওয়া কষ্টসাধ্য। কৃষকরা বলছেন, বালুতে আবাদ হয় না। চাষ করলেও তেমন ফসল পাওয়া যায় না।

 

গবেষণা তথ্য বলছে, ১৯৮৪ সালের তুলনায় শুষ্ক মৌসুমে ৫০ শতাংশ আয়তন হারিয়েছে পদ্মা নদী। আর এ জন্য দায়ী করা হয় ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ সীমান্তের ১৮ কিলোমিটার দূরে গঙ্গার ওপর নির্মিত ফারাক্কা ব্যারাজকে। উজানে ভারত পানি প্রত্যাহার করায় অস্তিত্ব সংকটে কেবল পদ্মাই নয়, মরে গেছে কিংবা মৃতপ্রায় গড়াই-বড়ালের মতো অনেক শাখা-উপশাখা নদী।

 

ফারাক্কা ব্যারাজ উত্তরের জনপথ থেকে বিশ্ব ঐতিহ্যের সুন্দরবন পর্যন্ত জীববৈচিত্র্য আর জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত।

 

তিনি বলেন, এখন ব্রহ্মপুত্র দিয়ে শুকনো মৌসুমে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার কিউসেক পানি আসে। গঙ্গা দিয়েও আগে সেই পরিমাণ আসতো। ১৯৭৫ সালের প্রথম যখন ভারত পানি দেয়া প্রত্যাহার শুরু করে, এরপর হঠাৎ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে লবণাক্ততা বাড়ে। এখন এটার অবস্থা আরও সংকীর্ণ হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: পদ্মার কৃষকের মুখে ভুট্টার হাসি, বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ২শ’ কোটি!

 

এদিকে গঙ্গার পানি বণ্টনে ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তিও শেষ হতে যাচ্ছে আগামী বছরের ডিসেম্বরে। তাই চুক্তি নবায়নে এখন থেকেই উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।

 

আইনুন নিশাত বলেন, ‘এই চুক্তি নবায়নের কাজ এখন থেকেই করতে হবে। নবায়নের পর কে কতটা পানি পাবে, এটা নির্ভর করবে দুদেশের রাজনীতিবিদরা কতটুকু সমঝোতা করতে পারে।’

 

সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে চেষ্টাটা হবে যাতে, পানিটাকে পানির বিষয় হিসেবে দেখে কূটনীতিক দক্ষতা যতটা আছে সেটাকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।’

 

পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘গঙ্গা চুক্তি নবায়নে প্রাথমিক কাজ এগিয়ে রাখবে অন্তর্বর্তী সরকার। বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে পরবর্তী সরকারকে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন