শনিবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী জনশক্তি আয়োজিত আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
আমীর খসরু বলেন, ‘১৪ মাস ধরে একটি অনির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনা করছে। তারা এক্সারসাইজ করছে। জাতীয় স্বার্থে সবাই এতে অংশ নিলেও, এর অর্থ এই নয় যে আমি যা চাই তা মানতে হবে।’
নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন নির্বাচন হতে গেলে, যারা দেশ পরিচালনা করছে, তাদের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, ‘যাদের নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তাদেরকে সরিয়ে দিতে হবে। এদের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাদেরকে সরিয়ে না দিলে সুষ্ঠু নির্বাচনের চেষ্টা করলেও প্রশ্ন থেকে যাবে।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় গেলে প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ দেবো: সালাহউদ্দিন
খসরু বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে দেশ পরিচালনা না করলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চরিত্র-বৈশিষ্ট্য সংবিধানে লেখা ছিল। প্রশ্নের সমাধান সরকারকে দিতে হবে। তিনি মনে করেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারকে এখনই পাবলিক পারসেপশন তৈরি করতে হবে।
খসরু দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘১৫ বছরের সংকটময় সময়ে কেউ ভোট দিতে পারিনি। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হলে নির্বাচনে যেতে হবে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অনেকে ‘মবোক্রেসি’ করে রাস্তায় নেমে জোর করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে। তিনি মনে করেন, দাবি মানাতে হলে তা ম্যানিফেস্টোতে উল্লেখ করে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
খসরু বলেন, ‘বিএনপি আজ রাস্তায় নামলে দেশের পরিস্থিতি কোথায় যাবে? কিন্তু বিএনপি নামবে না। আমরা দেশকে স্থিতিশীল রাখতে চাই, শান্তিতে রাখতে চাই।’ তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি সাংঘর্ষিক ও প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়কের মুডে যেতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে: আমীর খসরু
ঐকমত্যের প্রক্রিয়ায় সব দফা সনদে প্রতিফলিত না হওয়ার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, ৩১ দফার সবকিছু সনদে প্রতিফলিত হয়নি। ঐকমত্য না হলেও ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে বিএনপি। যারা এখন সংস্কারের সবক দিচ্ছেন, বিএনপি যখন ৩১ দফা দিল, তাদের মুখ থেকে তখন ‘স’-ও বের হয়নি বলে তিনি সমালোচনা করেন।
তিনি নিশ্চিত করেন, সনদের আইনি ভিত্তি থাক বা না থাক, ‘বিএনপি যখন সই করেছে, অবশ্যই বাস্তবায়ন করবে’।
একই অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং উপদেষ্টাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে। নিরপেক্ষতার প্রশ্নে সরকার পাস করতে পারেনি। তারা পাস করতেও চায় না।
সাইফুল হক মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে আর কোনো প্রশ্ন থাকা উচিত নয়। কারণ, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সমাধানের দিকে হাঁটছে। তিনি বলেন, সংস্কার সমাধানের দিকে আছে। নির্বাচন নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন নেই। সবাইকে আস্থার মধ্যে নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে সাইফুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসা। নিম্নকক্ষে ভুলভাবে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি উপস্থাপন করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘কমিশনের এজেন্ডায় নিম্নকক্ষে পিআর ছিল না। এখন রাজপথে এসব বিষয় নিয়ে যাওয়া ঠিক না।’ সাইফুল হক আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এসব বিষয় নিয়ে অন্য পক্ষ আবার রাজপথে নামলে দেশের রাজনীতিতে ‘হাসিনার আমলের মতো রাজপথ’ তৈরি হতে পারে।

৩ সপ্তাহ আগে
৪







Bengali (BD) ·
English (US) ·