গত সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ক্যারিবীয় সাগরে সাতটি নৌযান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব হামলায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেন, এসব নৌযান ভেনেজুয়েলা থেকে এসেছে এবং দেশচির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ‘মাদক-সন্ত্রাসী হুমকি’র অংশ।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে একটি নৌযানে অষ্টম হামলা চালালো মার্কিন বাহিনী। এক এক্স পোস্টে হামলার একটি নাটকীয় ভিডিও শেয়ার করে মার্কিন যুদ্ধমন্ত্রী হেগসেথ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে যুদ্ধ মন্ত্রণালয় একটি চিহ্ণিত সন্ত্রাসী সংগঠন পরিচালিত একটি জাহাজে আরও একটি মারাত্মক হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারের সাথে জড়িত ছিল।’
এদিকে ভেনেজুয়েলার নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ক্যারিবীয় সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেনেজুয়েলার নৌযানগুলোর ওপর মার্কিন হামলাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এবং ‘উত্তেজনা বৃদ্ধির বিপজ্জনক উসকানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘের নিযুক্ত স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের একটি দল।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার প্রধান দুই তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগের পেছনে যুক্তি থাকলেও এসব হামলার আইনি ও নৈতিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, ‘যদিও অভিযোগগুলো সত্য হয়, তবুও আন্তর্জাতিক জলসীমায় কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রাণঘাতী শক্তির প্রয়োগ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল এবং একে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে গণ্য করা যায়।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত এই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব হামলা ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অপর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতির পরিপন্থী। পাশাপাশি, এটি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতারও লঙ্ঘন।
তারা আরও বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ক্যারিবীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং তা অপ্রত্যাশিত সংঘাত ডেকে আনতে পারে। অন্যদিকে ওয়াশিংটনের দাবি, তাদের এই পদক্ষেপ জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগের অংশ। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এ বিষয়ে অবহিত করার শর্ত এখানেও প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন: পরমাণু ইস্যুতে খামেনির বক্তব্যের কঠোর প্রতিক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল বলেন, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের এই বিবৃতি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কারাকাসের অবস্থানকে সমর্থন করে। তিনি টেলিগ্রামে দেয়া এক বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বারবার আত্মরক্ষার কথা বলে মনগড়া অভিযোগ তুলে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে এবং এর মাধ্যমে তারা ক্যারিবীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা বিপন্ন করছে।’
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের ‘তথাকথিত বিশেষজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘তারা একজন অবৈধ নেতা ও অপরাধীর পক্ষ নিচ্ছেন, যিনি এই অঞ্চলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছেন এবং আমেরিকানদের ক্ষতি করছেন।’
]]>
৪ সপ্তাহ আগে
৬







Bengali (BD) ·
English (US) ·