কন্যার জন্মের পরপরই সংসারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশায় জমির আলী বিদেশ পাড়ি জমান। প্রথমে পরিবারে স্বস্তি এলেও ধীরে ধীরে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। সায়মার দাবি, বিদেশে যাওয়ার পর থেকেই স্বামী তার খোঁজখবর নেয়া বন্ধ করে দেন, পাঠানো বন্ধ করেন খরচও। একইসঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের আচরণ বদলে যেতে থাকে, শুরু হয় তার প্রতি অবহেলা ও নির্যাতন।
সায়মার দুর্ভোগ তখন আরও বাড়ে, যখন তিনি জানতে পারেন, জমির আলী নতুন বিয়ে করে আলাদা সংসার গড়েছেন। আর তিনি এখনো পড়ে আছেন শ্বশুরবাড়িতে, যেখানে নেই কোনো স্বীকৃতি, নেই ন্যূনতম নিরাপত্তা। নিজেই একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে সন্তানের খরচ চালাচ্ছেন, কিন্তু আর্থিক সংকটে কখনোই কন্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেননি।
এখন শ্বশুর জৈন উদ্দিনের সঙ্গে জমি নিয়েও বিরোধে জড়িয়েছেন সায়মা। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আমার শ্বশুরের কাছ থেকে ১০ কাঠা জায়গা কিনেছিলেন প্রায় ২২ বছর আগে, কিন্তু আজও সেই জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। জায়গা দাবি করায় উল্টো আমাকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে, এমনকি মারধরও করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এই বিষয়ে শ্বশুর জৈন উদ্দিন বলেন, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি সত্য, তবে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও সায়মার গড়িমসির কারণে তা দেয়া যাচ্ছে না।’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমার ছেলে তাকে ডিভোর্স দিয়েছে, তারপরও কেন সে এখানে থাকে, তা বুঝি না।’
আরও পড়ুন: কালিয়াকৈরে ডাকাতের হামলায় যুবক নিহত
তবে সায়মা ডিভোর্সের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘সাত বছর আগে মৌখিকভাবে আমাকে জানানো হয়েছিল যে আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়েছেন, কিন্তু আমি কোনো কাগজ পাইনি।’
এই বিষয়গুলো নিয়ে সায়মা একাধিকবার থানায় অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। সবশেষ চলতি মাসের ১৩ তারিখ শ্বশুরকে প্রধান আসামি করে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য একজন এএসআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
]]>