পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ‘খুনের পরে গুম’ হওয়া আলাউদ্দিন!

১ সপ্তাহে আগে
মাদারীপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হত্যার পর লাশ গুমের মামলা দায়েরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলা দায়েরের দুইদিন পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে উদ্ধার করা হয় আত্মগোপনে থাকা যুবক আলাউদ্দিন বেপারীকে (২৫)। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলাউদ্দিনকে মাদারীপুরে নিয়ে আসা হয়।

বুধবার তাকে তোলা হয় মাদারীপুরের আদালতে। এরআগে গত শনিবার সদর মডেল থানায় আলাউদ্দিনের মা রানু বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ছেলেকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশ ১৭ জনের নামে মামলা রেকর্ড করে। এছাড়া মামলায় ৫-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামিও করা হয়।


মামলার এজাহারে বলা হয়, গত পহেলা এপ্রিল মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের শ্রীনাথদী গ্রামের মলফত বেপারীর ঘরে প্রবেশ করে প্রতিবেশি ইলিয়াস মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন। পরে ঘরের আলমিরা ভেঙে কয়েক লাখ টাক ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে তারা। পরে মলফত বেপারীর ছেলে আলাউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ইলিয়াস ও তার লোকজন। বাধা দেয়ায় পিটিয়ে আহত করা হয় মলফত বেপারীর স্ত্রী রানু বেগমকে। 

আরও পড়ুন: প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আত্মগোপনে যুবক, চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার

পরে আলাউদ্দিনকে হত্যা করে লাশ গুম করে হামলাকারীরা। এ ঘটনায় রানু বেগম বাদী হয়ে ছেলেকে হত্যার পর লাশ গুম করেছে মর্মে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্তে নামে সদর মডেল থানা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয় আলাউদ্দিনকে। প্রতিপক্ষ ইলিয়াস মোল্লাকে ফাঁসাতে গুম ও খুনের নাটক করা হয়েছে উল্লেখ করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন মামলার আসামি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এদিকে এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি শ্রীনাথদী গ্রামের মৃত জনাব আলী মোল্লার ছেলে ইলিয়াস মোল্লার পুুকরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করে একটি চক্র। পরে মাছ মরে যাবার ঘটনায় আলাউদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজনের নামে থানায় অভিযোগ করা হয়। ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করে পুলিশ। এ ঘটনা থেকে বাঁচতে প্রতিপক্ষ ইলিয়াস মোল্লাকে ফাঁসাতে ছেলেকে আত্মগোপনে পাঠিয়ে গুম ও খুনের মামলা করে রানু বেগম। ঘটনার তদন্ত করে দোষীর বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ১৭ আসামি ও এলাকাবাসী।


এদিকে মামলার বাদী রানু বেগম ও আলাউদ্দিনের চাচাতো ভাই রফিক মুঠোফোনে দাবি করেন, ‘আলাউদ্দিনকে কয়েকবার মারধর করেছে ইলিয়াস ও তার লোকজন। এছাড়া ইলিয়াসের পুকুরে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধনে মিথ্যা মামলা দায়ের করে রানু বেগমের পরিবারের নামে। ঘটনার দিন ঘরে ঢুকে লুটপাট চালিয়ে আলাউদ্দিনকে নিয়ে যায় ইলিয়াসের লোকজন। পরে আলাউদ্দিনকে আর না পাওয়া গেলে দায়ের হয় এ গুম ও খুনের মামলা।’

আরও পড়ুন: আধিপত্য বিস্তারে খুনের পর এবার বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ


মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান জানান, ‘গুম ও খুনের মামলার ঘটনায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যুবক আলাউদ্দিন নিজেই আত্মগোপনে থেকে গুম-খুনের ঘটনা সাজিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার তাকে আদালতে তোলা হবে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন