বর্ষার শুরুতেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, সবুজ পাহাড় আর ঝর্ণার কলধ্বনি যেন আকর্ষণীয় করে তুলেছে রাঙ্গামাটির প্রকৃতিকে। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন অসংখ্য পর্যটক।
এই সময়টিকে ঘিরে শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, আসামবস্তি সড়ক ও সাজেক ভ্যালি হাতছানি দিচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। হ্রদের বুকে গড়ে ওঠা রিসোর্টগুলোকে নতুনভাবে সাজিয়ে তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটকদের আরামদায়ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে কটেজ, হোটেল ও রেস্টুরেন্টে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
হোটেল স্কয়ার পার্কের মালিক মো. নেয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বর্ষার রাঙ্গামাটি এক অনন্য রূপে সেজে ওঠে। এবারের ঈদের ছুটিও পড়েছে বর্ষার মাঝে, তাই পর্যটকের চাপ বেশি হবে বলে আমরা আগেই প্রস্তুতি নিই। ৮ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত আমাদের সব রুম বুকিং হয়ে গেছে।’
মায়াবীদ্বীপ রিসোর্টের ব্যবস্থাপক মিঠুন ত্রিপুরা বলেন, ‘ঈদের ছুটি উপলক্ষে মে মাসেই আমাদের সব কটেজ বুকিং হয়ে গেছে। এখন শুধু আগত অতিথিদের সাদর সম্ভাষণের অপেক্ষা।’
আরও পড়ুন: ১৩ মাস পর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পর্যটকবরণে প্রস্তুত রুমা-থানচি
সাজেক, কাপ্তাই, আসামবস্তিসহ শহরের প্রায় সব পর্যটন কেন্দ্র ও রিসোর্টেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। পর্যটকদের কেনাকাটার সুবিধার্থে স্থানীয় দোকানদাররাও নতুন পোশাক, হস্তশিল্প ও পাহাড়ি ডিজাইনের পণ্যে সাজিয়ে তুলেছেন দোকানপাট।
রাঙ্গামাটি তন্তুজ টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপক জুলিয়া আন্তার বলেন, ‘ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকের ভিড় হবে ধরে নিয়েই আমরা নতুন ডিজাইনের পোশাক এনেছি। আশা করি ভালো সাড়া পাবো।’
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত ট্যুরিস্ট পুলিশও। রাঙ্গামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমান বলেন, ‘জেলার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরিস্ট স্পটে আমাদের সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। মোবাইল টিমের পাশাপাশি হ্রদেও থাকবে আমাদের বিশেষ টিম। আমরা চাই পর্যটকরা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ভ্রমণ শেষে নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারেন।’
খাত সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এবারের ঈদের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে প্রায় এক লাখ পর্যটকের আগমন ঘটবে। পর্যটন খাতের এই ব্যস্ততা যেমন স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙা করছে, তেমনি দেশের অন্যতম এই পর্যটন গন্তব্য হয়ে উঠছে আরও সমৃদ্ধ।