পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে কুষ্টিয়ায় সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও

৩ সপ্তাহ আগে
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়।

ঘেরাও কর্মসূচির শুরুতে ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে তারা মজমপুরগেট থেকে বড়বাজার এনএস রোড পর্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

 

অবরোধ চলাকালে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মোস্তফিজুর রহমান, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) কেন্দ্রীয় সদস্য সুলতান মারুফ তালহা, এনসিপি নেতা রাসেল আহম্মেদ, কুষ্টিয়া জেলা আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান রিকু, কুষ্টিয়া শহর ছাত্রশিবিরের সাবেক সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান পলাশ, দৈনিক কুষ্টিয়া পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আলী মুজাহিদ, এনসিপি শ্রমিক উইং নেতা আল আমিন ও সাধারণ শিক্ষার্থী পারভেজ প্রমুখ।

 

বক্তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন:


১. প্রশ্নফাঁস ও আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িতদের চিহ্নিত করে স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
২. দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. বিতর্কিত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পুনরায় পরীক্ষা নিতে হবে।

 

সমাবেশ শেষে সিভিল সার্জন বা জেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত না হলে ছাত্র-জনতা মূল কার্যালয় ঘেরাও করেন। তারা সিভিল সার্জনের পদত্যাগ ও নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেন।

 

ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেনকে ছাত্র-জনতার সামনে আনেন।

 

আরও পড়ুন: লালন মেলায় সাংবাদিকের ওপর হামলা, গ্রেফতার ২

 

এ সময় সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম অনিবার্য কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

তবে তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হয়ে ছাত্র-জনতা নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান। তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।

 

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাতটি ক্যাটাগরির ১১৫টি শূন্য পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নেন প্রায় ১৬ হাজার ৭৮৯ জন প্রার্থী। তবে পরীক্ষার আগের রাতে শহরের একটি বাসায় ২৫ থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থীর প্রবেশ ও পরীক্ষার আগে বের হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

 

এ ঘটনায় ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ ওঠে, ওই বাসায় পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখস্থ করানো হয়েছে। পরে জানা যায়, ওই বাসাটি ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. হোসেন ইমামের।

 

ভিডিও ভাইরালের পর কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়ে জানান। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষা যথাযথ প্রক্রিয়ায় এবং সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ভিডিও ক্লিপটি প্রচারের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন