শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ড. আবদুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, সম্প্রতি নারী রাজনৈতিক কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার, হুমকি ও মানহানিকর প্রচারণার শিকার হয়েছেন, যা গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণে এক অন্ধকার ছায়া ফেলেছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতিতেও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় ধর্ষণের হুমকি ও চরিত্রহননের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদের অংশগ্রহণে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
তারা আরও বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে সাইবার বুলিংয়ের শিকারদের মধ্যে নারী ও কিশোরীর সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে রিভেঞ্জ পর্নোগ্রাফি, ভুয়া প্রোফাইল তৈরি, ব্ল্যাকমেইল এবং অশালীন মেসেজ বা বার্তা প্রেরণ। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অনলাইন নির্যাতনের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে, যেখানে অনেকে সপ্তাহে একাধিকবার এমন হয়রানির শিকার হন। মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর ভয়াবহ প্রভাবও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি দশজন নারী ভুক্তভোগীর একজন মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হন। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
আরও পড়ুন: সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে ভেঙে পড়ছেন নারী ফুটবলাররা, প্রয়োজন মনোবিদ
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালে রিপোর্ট করা অনলাইন অপরাধের ৫২ শতাংশই সাইবারবুলিং সম্পর্কিত, যার একটি বড় অংশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যদিও সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮সহ বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছে, তবুও বাস্তব প্রয়োগে ঘাটতি রয়ে গেছে। বিশেষ করে জেনারেশন-জেড নারী ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে, যারা অনলাইন সহিংসতার প্রধান ভুক্তভোগী।
এই বাস্তবতার আলোকে বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের এই সেমিনারটির মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
এ সময় বক্তারা আইনগত সুরক্ষা এবং সাইবারবুলিংয়ের মানসিক ও শারীরিক প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন।
সেমিনারে রেজোনেয়ার বাংলাদেশের চেয়ারপারসন জান্নাতুন নওরীণ উর্মি বলেন, এই উদ্যোগ শুধু অনলাইন নিরাপত্তা নয় বরং তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের কণ্ঠস্বরকে শক্তিশালী করার একটি প্রচেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া, যেখানে তরুণীরা হয়রানির ভয় ছাড়াই নেতৃত্ব দিতে পারে।
আরও পড়ুন: যশোরে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের আয়োজন বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও নারী ক্ষমতায়নের যাত্রায় এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হয়ে থাকবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ডা. মো. রাহানুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আশরাফ জালাল খান, সাংবাদিক সানজিদা ইসলাম জুঁই ও ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী সেমিনারে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, সামাজিক সংগঠন দ্য বাংলাদেশ রেজোনেয়ার (টিবিআর) সমাজের যুব শ্রেণি বিশেষ করে নারীদের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রাজনৈতিক অধিকার, সাইবার বুলিংসহ নানা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে কাজ করে আসছে।
]]>
৪ সপ্তাহ আগে
৭







Bengali (BD) ·
English (US) ·