নারায়ণগঞ্জে আদালতপাড়ায় বিচার প্রার্থীকে মারধর, বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ

৩ সপ্তাহ আগে
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে এক বিচার প্রার্থীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও তার সহযোগী কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে।

এসময় বিচার প্রার্থী ব্যবসায়ী ইরফান মিয়া (৪২) ও তার স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের চার সদস্য আহত হয়েছেন। এসময় আদালত প্রাঙ্গণে আতংক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।


এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর পরিবার। ইতোমধ্যে আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।


হামলার শিকার ব্যবসায়ী ইরফান মিয়া ফতুল্লার ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা। তিনি শহরের কালিরবাজারে স্যানিটারি দোকানের ব্যবসা করেন।


ইরফান মিয়া জানান, ইসমাইল নামে এক ব্যক্তির কাছে তিনি ২৫ লাখ টাকা পান। টাকা আদায়ের জন্য আদালতে একটি মামলাও করেছেন তিনি। সেই মামলার ধার্য তারিখ রোববার (২৬ অক্টোবর)  দুপু‌রে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি আদাল‌তে উপস্থিত হন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি'র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান তাকে জোর করে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেন।


ইরফান মিয়া অভিযোগ করেন, এরপর অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী ও আসামিপক্ষের লোকজন মিলে তাদের উপর হামলা চালায়। ১৫ থেকে ২০ জন মিলে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তার স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ পরিবারের চারজন গুরুতর আহত হন। পরে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তারা শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।

 

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরপর ৩টি গুলিতে লুটিয়ে পড়েন বিএনপি নেতা, পাঠানো হলো ঢাকায়


হামলায় আহত ইরফান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে হামলাকারীরা আমাকে এলোপাথাড়ি মেরেছে। আমার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে (৩৮) চুলের মুঠি ধরে ঘুষি দেয় এবং পরনের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে। আমার ৫ বছর বয়সের শিশু ছেলে আব্দুল্লাহকে মাটিতে ফেলে বেশ কয়েকটি লাথি দেয়। আমার বড় ছেলে জাতীয় বক্সিং খেলোয়াড় জিদানকে (১৭) এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মেরেছে। এই হামলায় স্ত্রীসন্তানসহ আমরা পুরো পরিবার আহত হয়েছি। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই। দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’


এ ঘটনায় রোববার বিকেলে আহত ব্যবসায়ী ইরফান মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে।


তবে মারধরের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।


তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি আদালত প্রাঙ্গণে ছিলাম না। ঘটনার এক ঘণ্টা পরে আমি আদালতে উপস্থিত হই। আমার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করতে আমার প্রতিপক্ষের লোকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। লিখিত অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু আমি ঘটনার সময় ছিলাম না।


অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আরও বলেন, গত কিছুদিন আগে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে তারা তাদের হীন উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন