নাচোলে নিহত দুই শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কর্মী নয়, পরিবারের দাবি

২ সপ্তাহ আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতে নিহত দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় মিডিয়ার প্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতদের পরিবার।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নাচোল বাজারে ইলামিত্র গণপাঠাগার ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রে এই সংবাদ সম্মেলন করে নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবার।


এসময় নিহত রাইহান ও মাসুদের স্বজনরা বলেন, নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের খলসী ও মল্লিকপুর গ্রামের দুই কিশোর গ্রুপের মধ্যে পেয়ারা বাগানে কাজ করার সূত্র ধরে পূর্বের একটি বিরোধ ছিল। এরই সূত্র ধরে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গেলে মল্লিকপুর গ্রামের ছেলেরা তাদের দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। কিন্তু দুজনের কেউই এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। শুধুমাত্র তাদের বাড়ি খসলী গ্রামে হওয়ায় হত্যা করা হয়েছে।


নিহত রাইহানের ভাই ও মাসুদের বাবা আরও বলেন, এ ঘটনার পর থেকেই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের ভ্যারিফাইড পেজ ও নেতাকর্মীদের ফেসবুক পোস্ট এবং ভারতীয় কিছু মিডিয়া তাদের দুজনকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দেয়। কিন্তু তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। এরমধ্যে নিহত রাইহান পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে কিভাবে ছাত্রলীগের কর্মী হয়। ১৩ বছর বয়সী একজন প্রতিবন্ধী শিশুকে আ.লীগ ও তাদের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের কর্মী বলে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।


আরও পড়ুন: ঢাকায় দুজনকে ছাত্রলীগ কর্মী সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ


মাসুদের বাবা ও হত্যা মামলার বাদি এজাবুল হক বলেন, ‘আমার ছেলে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করতো। কোন ধরনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। তাই দয়া করে এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন, এই পথ থেকে সরে আসার অনুরোধ জানায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানায়। আমার ছেলের বিরুদ্ধে জয় বাংলা লেখার কারণে হত্যার যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাও সঠিক নয়।’


নিহত রাইহানের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আপনাদের কাছে হাত জোর করে অনুরোধ জানায়, দয়া করে এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করবেন না। ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে তারা। রাজনীতির কিছুই বুঝে না। অথচ আওয়ামী লীগ ও কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম এটাকে জয় বাংলা লেখার কারণে বলছে। তা সঠিক নয়। কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে যাতে হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান তারা।’


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত রাইহানের ভাই আলী আকবর, বাবা আব্দুর রহিম, নিহত মাসুদের বাবা এজাবুল হক, ভাই জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যান্যরা। গত ১৭ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মল্লিকপুর বাজারে ছুরিকাঘাতে এই নিহতের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি আরও ৪ জন কিশোর এ ঘটনায় আহত হয়। নিহত মাসুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অষ্টম সেমিস্টারে ও রাইহান পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতেন।


চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, হত্যাকাণ্ডের পরদিন রাতে নিহত মাসুদের বাবা এজাবুল হক ১৮ জনকে আসামি করে নাচোল থানায় মামলা করে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন