এ সম্পর্কে হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, জান্নাতিদের জান্নাতে যাওয়ার পর দুনিয়ার কোনো জিনিসের জন্য আফসোস থাকবে না। শুধু ওই সময়ের জন্য আফসোস হবে, যা আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত অনর্থক কথা বা কাজে অতিবাহিত হয়েছে।’ (বায়হাকি ৫০৯)
তাই নতুন একটি বছর শুরু হওয়া মানে নিজের মনে এই প্রত্যয় করা উচিত, যাতে পূর্বের বছরের চেয়ে এই বছর আরও বেশি ঈমান বাড়ে এবং আমলের পরিমাণ বাড়ে। কী কী কাজ করে ঈমান ও আমল বাড়ানো যায় তার পরিকল্পনা করতে হবে সেই সঙ্গে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করতে হবে।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে একজন মুসলমানের করণীয় ও বর্জনীয়
সময়ের আগমন-প্রস্থান আমাদের সে শিক্ষাই দেয়। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘তিনি সেই সত্তা, যিনি দিন ও রাতকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন। এসব বিষয় শুধু তার উপকারে আসে, যে উপদেশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ (সুরা ফুরকান ৬২)
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে হিশাম (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, সাহাবায়ে কেরাম (হিজরি ক্যালেন্ডারের) নতুন মাস বা নতুন বছর শুরু হলে এ দোয়াটি পড়তেন:
اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمَنِ وَجَوَار مِنَ الشَّيْطَانِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি ওয়াল ইমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রাহমানি ওয়া জাওয়ারিম মিনাশ শায়ত্বানি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মাঝে এ মাস/বছরের আগমন ঘটান শান্তি, নিরাপত্তা এবং ইমান ও ইসলামের ওপর অবিচলতার সাথে, শয়তান থেকে সুরক্ষা ও দয়াময় আল্লাল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে। (মুজামুস সাহাবাহ ১৫৩৯)
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনের নামে কোনো ধরনের পাপাচার ও অশ্লীল কার্যকলাপ ইসলাম সমর্থন করে না। এর মাধ্যমে বরং বছরের প্রথম প্রহরটি পঙ্কিল করা হয়। ইসলাম সুস্থ বিনোদনচর্চায় উৎসাহ দেয়। তবে অশ্লীলতা, কদর্য আচরণ, প্রবৃত্তির অনুসরণ ও অনৈতিকতার সঙ্গে কখনো সমঝোতা করে না। তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, অতীতের পাপের মার্জনা চেয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ভবিষ্যৎ দিনগুলো যাতে সুন্দর, সমৃদ্ধ ও পুণ্যময় হয় সে জন্য দোয়া করা।
আরও পড়ুন: থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের বিধান
প্রত্যেক কর্তব্যসচেতন ব্যক্তিই নির্দিষ্ট সময় শেষে কর্মফলের হিসাব করেন। তাই বছরের আগমন ও প্রস্থানে প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তির কর্তব্য হলো আত্মসমালোচনা করা। পাশাপাশি বিগত বছর যতটুকু সময় আল্লাহর বিধান ও সন্তুষ্টিমতো চলা সম্ভব হয়েছে, সে জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করা। গুনাহ, গাফিলতি ও আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে যে সময়টুকু কেটেছে, সেটার জন্য অনুতপ্ত হওয়া; আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নতুন বছর সৎ, নিষ্ঠা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক কাটানোর প্রত্যয় করা।
]]>