নতুন টাকা ক্রয় করা কি জায়েজ?

৩ সপ্তাহ আগে
এসেছে ঈদ। আনন্দ আর সুখময়তায় মুখর হবে পরিবেশ। যারা রোজা রেখেছে তাদের আনন্দ সবচেয়ে বেশি। তারা দয়াময় আল্লাহর থেকে ঈদের দিন আজর বা প্রতিদান পাবেন।

ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকা কেনাবেচার প্রচলন রয়েছে আমাদের দেশে। ঈদ ছাড়াও আমাদের দেশে নতুন টাকা কেনাবেচা হয়। বেশিভাগ মানুষ ঈদে ছোটদের সালামি দেওয়ার জন্য নতুন নোট কিনে থাকেন। নতুন নোট কেনার জন্য অনেক সময় অতিরিক্তি টাকা দিতে হয়। অর্থাৎ, ১ হাজার টাকার নতুন নোট বিক্রি করা হয় ১ হাজার ২০ টাকায়। এক হাজার টাকা নতুন নোট কিনতে হয় এক হাজার দশ টাকা থেকে বিশ টাকা দিয়ে। ইসলামে এ কেনাবেচার বিধান কী?

 

এভাবে টাকার বিনিময়ে টাকা বেশ-কম করে বেচাকেনাকে নাজায়েজ। ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদরা এটাকে নাজায়েজই বলেছেন। ইসলামে এক প্রকারের দুটি জিনিস কমবেশি ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ। কারণ, এ রকম লেনদেনে অতিরিক্ত অংশ সুদ হয়ে যায়।

 

তাই আলেমরা, একে সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেন। এ ধরনের ব্যবসায় জড়িত হওয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবে না। কারণ টাকা বা কাগজের নোট পণ্য নয়, বরং এটি মূল্য, তাই এ নিয়ে ব্যবসা করার অনুমোদন নেই ইসলামে।

 

আরও পড়ুন: সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে যা আছে


তবে অনেক উলামায়ে কেরাম নতুন টাকা সংগ্রহের একটা পদ্ধতিকে জায়েজ বলেন অপারগতার ক্ষেত্রে। একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহ করার পরিশ্রম বাবদ কিছু টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। শর্ত হলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হচ্ছে নতুন টাকা সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে, নতুন টাকার মূল্য হিসেবে নয়।

 

ইসলামের পরিভাষায় মুদ্রার লেনদেনকে বাইয়ুস সারফ বলা হয়। এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে। এক. দুটি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মুদ্রা। দুই. একই দেশের মুদ্রা। প্রথম প্রকার তথা এক দেশের মুদ্রা আরেক দেশের মুদ্রার বিনিময়ে কম-বেশি করে বেচাকেনা করা জায়েজ।


তবে শর্ত হলো, বেচাকেনার বৈঠকেই অন্তত এক পক্ষকে মুদ্রা সোপর্দ করতে হবে। কোনো একটি পক্ষও যদি বিনিময়কৃত মুদ্রা বুঝে না পায়, তবে সেই বেচাকেনা বৈধ হবে না। (জাদিদ ফিকহি মাসায়িল ৪/২৮; জাদিদ মুআমালাত কে শরয়ি আহকাম ১-১৩৯)

 

আর দ্বিতীয় প্রকার তথা একই দেশের মুদ্রা হলে পরস্পর লেনদেনে সমতা রক্ষা করা জরুরি। কমবেশি করে বেচাকেনা করা মোটেও জায়েজ হবে না।

 

এমনটি করলে সেই লেনদেন সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে যা বেশি নেওয়া হবে তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা, ০৩/৮৫, মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন ০২/৬৫-৬৬, শারহু মাআনিল আসার, ৫৫৫৪, সুনান দারু কুতনি ৩০৬০)


শুধু টাকাপয়সা বা সোনা-রুপার ক্ষেত্রেই নয়, যেকোনো বস্তুর ক্ষেত্রেই একই জিনিস কমবেশি করে বেচাকেনা করা বৈধ নয়।


করলে বর্ধিত অংশটি সুদ হয়ে যায়। দেশি মুদ্রা একই প্রকারের হওয়ায় পরস্পর কমবেশিতে বেচাকেনা ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। অতিরিক্ত অংশ সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (আদদুররুল মুখতার ৫/১৭১-১৭২, বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা ১/১৬৩)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন