ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজবাড়ি খননকালে পাওয়া মিলল বিশাল কড়াই

৩ ঘন্টা আগে
দিনাজপুরে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজবাড়ি খননকালে একটি শতবর্ষের পুরোনো লোহার কড়াই পাওয়া গেছে। কেউ বলে এটি ১৯৬০ সালে আবার কারও দাবি শতবছরের। বড় লোহার কড়াই, যা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হতো। অনেকের দাবি- রানী মহল, আয়না মহল খনন করলে হয়ত রাজপ্রাসাদে থাকা মূল্যবান ও দুর্লভ জিনিসপত্র পাওয়া যাবে। সংস্কারের মাধ্যমে ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজবাড়ির অবশিষ্ট চিহ্ন ধরে রাখতে জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।

রাজবংশের শেষ নিদর্শন দিনাজপুরের রাজবাড়ি দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এটি। রাজপ্রাসাদে থাকা মূল্যবান ও দুর্লভ জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। দেখতে এসে দর্শনার্থী এবং পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যান। দিনাজপুর রাজবাড়ি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে হলেও কোনো রক্ষণাবেক্ষণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খনন করতে গিয়ে পাওয়া গেছে রাজার আমলে একটি লোহার কড়াই। হয়তো পাওয়া যেতে পারে আরও দুর্লভ নির্দশন।


জানা গেছে, শহরের উত্তর পূর্বে নিরিবিলি মনোরম এক গ্রাম্য পরিবেশে হিন্দু, মুসলিম ও ইংরেজ এই তিন যুগের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের চিত্র সম্বলিত রাজবাড়ি। ইতিহাস বলে, দিনাজপুরের রাজবংশের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ৪০০ বছর ধরে প্রায় ১৬৬ একর জায়গা জুড়ে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বিশাল প্রাসাদ।


রাজবাড়িতে রয়েছে আয়না মহল, রানী মহল ও ঠাকুরবাড়ি মহল। এছাড়া ফুলবাগ, হীরাবাগ, সবজিবাগ, পিলবাগ, দাতব্য চিকিৎসা, অতিথি ভবন, কর্মচারীদের আবাসিক এলাকা, প্রশাসনিক ভবন ও প্রসাদের মধ্যে কয়েকটি বিরাট দীঘি রয়েছে। দ্বিতল আয়নামহলে নিচে ওপরে মিলে ২২টি করে মোট ৪৪টি কক্ষ রয়েছে। এই ভবনে মূল্যবান মার্বেল পাথর ও স্টটিকমতি খচিত ছিল।


আরও পড়ুন: সাভারে কোটি টাকার বিষ্ণুমূর্তিসহ গ্রেফতার ১


রাজপ্রাসাদ এলাকায় জলসাগর, তোষাখানা, পাঠাগারসহ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভবন ছিল। আয়না মহলের উত্তরে রানির দেউড়ি পেরিয়ে রানীমহল অবস্থিত। দিনাজপুরের রাজবাড়ি একদিকে যেমন জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান, অন্যদিকে এটি হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য পূণ্যস্থান। দেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি রক্ষায় সরকারের নজর দেয়ার আহ্বান। সংস্কারের মাধ্যমে শুধুই পরিত্যক্ত রাজবাড়ির ইটের কাঠামো রক্ষার দাবি দর্শনার্থী ও পর্যটকদের।


এদিকে, জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম রাজবাড়ি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। সে অনুয়ায়ী গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২৫ জন শ্রমিক দিয়ে পরিস্কার ও সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।


এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. রিয়াজউদ্দিন সময় সংবাদকে বলেন, ঐতিহাসিক রাজবাড়ি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এখন শুধু পরিত্যক্ত ইটের সমাহার।’


তিনি বলেন, ‘কোনো সরকারের আমলে এটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কেউ এগিয়েও আসেনি। কালের এই নির্দশন রক্ষার জন্য দিনাজপুর জেলা প্রশাসন নিজস্ব অর্থে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। খনন করতে কোনো নিদর্শন পাওয়া গেলে তা যাদুঘরে দেয়া হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন