মিরপুরে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশের দেওয়া ২৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩০.১ ওভারে সব কটি উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানে থামে ক্যারিবীয়রা।
সফরকারীদের দ্রুত গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে বল হাতে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তানভীর ইসলাম। একাদশে থাকলেও এদিন কোনো ওভার করেননি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে জয়ের পুঁজি এনে দেওয়ার নায়ক সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। সৌম্য ৯১ আর সাইফ ৮০ রানের ইনিংস খেলেছেন।
আরও পড়ুন: আমার কোনো অনুশোচনা নেই: সাকিব
অবশেষে প্রিয় ফরম্যাটে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। মাঝে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১ বছর ৭ মাস ৫ দিন। এর মধ্যে চার সিরিজ খেলে দুটিতে হোয়াইটওয়াশও হয়েছে। শেষমেশ সে ব্যর্থতার ইতি উইন্ডিজের বিপক্ষে টানলো লাল সবুজরা। অবশ্য সিরিজ জয়ের সুযোগ ছিল ক্যারিবীয়দের সামনে। প্রথম ওয়ানডেতে ২০৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৭৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল তারা। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২১৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টাই করে তারা। এরপর সুপার ওভারে জিতে সমতায় ফেরে। তবে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে তাদের কোনো সুযোগই দেয়নি টাইগাররা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৬ রানের বড় পুঁজি পায় স্বাগতিকরা। আগের দুই ওয়ানডেতে মিরপুরের কালো পিচে যেখানে প্রথম ইনিংসের রান ছিল যথাক্রমে ২০৭ ও ২০১৩, সেখানে আজ ঝড় তুলেছেন সাইফ ও সৌম্য। তাও প্রথম ম্যাচের পিচে খেলে তারা একশর উপর স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন। ২৫ ওভারের মধ্যে উদ্বোধনী জুটিতে দলকে এনে দিয়েছিলেন ১৭৬ রান। যা মিরপুরে বাংলাদেশের পক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ জুটি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের উদ্বোধনী জুটিতে ২৯২ রান টাইগারদের ওয়ানডে ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। শুধু উদ্বোধনী নয়, যেকোনো উইকেটেও বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি।
তবে এদিন সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন সাইফ-সৌম্য। ৭২ বলে ৬ ছক্কা ও ৬ চারের মারে ৮০ রান করে আউট হন সাইফ। ৮৬ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৯১ রান করে আউট হন সৌম্য। ৫৫ বলে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল আকিল হোসেন ৪১ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন।
আরও পড়ুন: মিরাজের অধিনায়কত্ব নিয়ে ইতিবাচক বিসিবি সভাপতি
এদিন রান তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের শুরুতেই চাপে ফেলেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। দেখেশুনে শুরুর পর হাতখুলে খেলার চেষ্টা করেছিলেন অ্যালিক অ্যাথানেজ। তবে তাকে সুযোগ দেননি নাসুম। ২১ বলে ১ ছক্কার মারে ১৫ রান করে নাসুমের ঘূর্ণিতে ব্যর্থ হয়ে এলবিডব্লিউন হন এ ওপেনার। এক ওভার পর আবার আক্রমণে এসে আকিম আগুস্তেকেও শিকার করেন নাসুম। ৩ বলে শূন্য রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন এ ব্যাটার। এরপর ইনিংসের নবম ওভারে আক্রমণে এসে নাসুম তুলে নেন আরেক ওপেনার কিংকে। ১৭ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান করে বোল্ড হন তিনি।
শুরুর ধাক্কা সামলে যে হাল ধরার চেষ্টা করছিলেন কেচি কার্টি ও অধিনায়ক শাই হোপ। সেখানে আবার বাধা হয়ে দাঁড়ালেন তানভীর ইসলাম। ১৬ বলে ৪ রান করে তার শিকার হন হোপ। তাতে ৪৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে উইন্ডিজ। ইনিংসের ১৯তম ওভারে আক্রমণে এসে ক্যারিবীয়দের ম্যাচ থেকেই ছিটকে দেন রিশাদ হোসেন। প্রথম বলে শেরফান রাদারফোর্ডের পর চতুর্থ বলে সাজঘরে ফেরান রস্টন চেজকে। রাদারফোর্ড ১৬ বলে ২ চারের মারে ১২ আর চেজ ৩ বলে শূন্য রানে আউট হন। দলীয় ৬৭ রানে সপ্তম উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। একপ্রান্ত আগলে রাখা এ ব্যাটার ৪৩ বলে ১৫ রানে ফেরেন। তাতে জয়টা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় টাইগারদের। শেষমেশ আকিলের ১৫ বলে ২৭ রানের ইনিংসে ১১৭ রানে পৌঁছায় ক্যারিবীয়রা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটাও তার।
ক্যারিবীয়দের দ্রুত গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে মাত্র ১১ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন নাসুম। ৩ উইকেট নিতে রিশাদের খরচ ৫৪ রান।
আরও পড়ুন: লিটনকে ফিরিয়ে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির দল ঘোষণা করলো বাংলাদেশ
এদিকে তিন ম্যাচের এ লড়াইয়ে ব্যাট হাতে ৬৮ রানের পাশাপাশি বল হাতে ১২ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হয়েছেন রিশাদ। শেষ ম্যাচে ৯১ রানের ইনিংসে ম্যাচসেরা হয়েছেন সৌম্য।
]]>

৪ সপ্তাহ আগে
৮







Bengali (BD) ·
English (US) ·