‘ত্রাণ চাই না, ভাত চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’ এমন স্লোগান নিয়ে পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগরের ভাঙন এলাকায় ১৩টি গ্রামের প্রায় এক হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
স্থানীয়রা বলছেন, বেড়িবাঁধে একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। তাদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে গেলে ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হবে। তাতে আসন্ন আমন মৌসুমেও বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
ভুক্তভোগী আবদুল মালেক বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে ঠিক একই স্থানে বাঁধ ভেঙে ১৩টি গ্রাম তলিয়ে যায়। আমরা ২ মাসেরও বেশি সময় পানির নিচে ছিলাম। এবার বাধ ভেঙে গেলে আমাদের ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাবে। বছরে একবার ভাঙনে সব শেষ হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন: খুলনায় নকল ওষুধ সরবরাহে লাজ ফার্মাকে জরিমানা
আরেক ভুক্তভোগী রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা ভাত চাই না, ত্রাণ চাই না শুধু একটা টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। জোয়ারের চাপ বাড়লে ভয়ে রাতে বাসায় ঘুমাতে পারি না। এই আতঙ্ক আমাদের কাটেই না। আমাদের দাবি দ্রুত এই স্থানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে এ অঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে হবে।’
স্থানীয় কৃষক আজিজুল হক বলেন, ‘আমনের চারা রোপণ করেছি। যদি এখন বাধ ভেঙে যায়, সব ফসল পানিতে ডুবে যাবে। আমরা পথে বসে যাব।’
দেলুটি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পলাশ কুমার বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আমরা বারবার দাবি জানিয়ে আসছি, তারাও আশ্বাস দেয়, বাঁধ সংস্কার করে দিবে। এখন নতুন করে যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে, তা যদি এখনই মেরামত করা না হয় তাহলে যে কোন সময় আমাদের সব প্লাবিত হয়ে যাবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘গত বছর একই সময়ে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। নিম্নমানের সংস্কারকাজের কারণে আবারও ফাটল ধরা পড়েছে। শুধু এই এলাকা নয়, পাইকগাছার হিতামপুর, দাকোপের বটবুনিয়া, আচাবুনিয়াতেও একই রকম ভাঙন দেখা দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই, গ্রেফতার ৩
পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের সীমাবদ্ধতার কারণে ভাঙনকবলিত এলাকায় টেকসই বেরিবাধ করা সম্ভব হয় না। তবে আমরা জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো মেরামতের চেষ্টা করছি। এছাড়া স্থায়ী টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা দ্রুত পাশ হবে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী স্থায়ী টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্ভব হলে বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে রক্ষা হবে।’
খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মোট ২ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে।
]]>