তীব্র গরমে অতিষ্ঠ খুলনার জনজীবন

১ সপ্তাহে আগে
বৈশাখের দাবদাহে নাজেহাল হয়ে পড়েছে খুলনার জনজীবন। রোববার (১১ মে) শহরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ।

এর আগের দিনও তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৮ ডিগ্রি। ক্রমাগত তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।


রোববার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তাঘাটে প্রয়োজন ছাড়া মানুষের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। সকালের দিকে রাস্তাঘাটে কিছুটা মানুষ দেখা গেলেও দুপুরের পর থেকে শহর কার্যত জনশূন্য হয়ে পড়ে। তীব্র রোদের তাপে বাইরে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে কষ্টে আছেন রিকশাচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।


সোনাডাঙ্গা এলাকার রিকশাচালক মজিবর রহমান বলেন, ‘গরমে রিকশা চালানো যায় না, মাথা ধরে যায়। কিন্তু না চালালে ঘরে ভাত উঠবে না। যাত্রীও আগের চেয়ে অনেক কম।’ 

আরও পড়ুন: তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল যশোরের জনজীবন

বটিয়াঘাটা এলাকার রাজু হাওলাদার বলেন, ‘ব্যবসায়ীক কাজে মোটর সাইকেল চালিয়ে খুলনায় এসেছি। এত তীব্র গরম আর আগে কখনও পড়েছে কি না মনে পড়ছে না। কাজের জন্য বাধ্য হয়ে শহরে আসতে হলো।
যারা তীব্র গরমে কাজে বের হচ্ছেন তাদের কাছে ভরসা বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকান। প্রতিটি শরবতের দোকানে ভীড় দেখা গেছে।’ 


শিববাড়ী মোড়ের একজন ভ্রাম্যমাণ শরবত ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই ঠান্ডা পানি দিয়ে লেবুর শরবত পান করছেন তৃষ্ঞা মেটাতে।’


তীব্র গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে। খুলনা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই আসছেন তাপঘাত, পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীরা। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।


খুলনা সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক ডা. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র গরমে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা সবাইকে প্রচুর পানি পান করতে বলছি। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।’

আরও পড়ুন: খুলনায় মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেফতার

তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। শহরের বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। অনেক শিক্ষক জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে গরম সহ্য করতে না পেরে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কিছু কিছু স্কুলে ক্লাস স্থগিত করতেও হয়েছে।


খুলনা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মিজানুর রহমান বলেন, এটি একটি মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। আজকের তাপমাত্রা খুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। আগামী এক-দুইদিন এই তাপপ্রবাহ চলবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম, ফলে এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হবে না।


চিকিৎসক ও আবহাওয়াবিদরা সবাইকে ঘরে থাকার, প্রচুর পানি পান করার এবং হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন