তিব্বতে চীনের বাঁধের জবাবে অরুণাচলে পাল্টা প্রকল্প ভারতের

২ সপ্তাহ আগে
তিব্বতে চীনের বাঁধ নির্মাণের জবাবে পাল্টা প্রকল্প হাতে নিয়েছে ভারত। দেশটির অরুণাচল প্রদেশে শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে আপার সিয়াং বাঁধ প্রকল্প।

চীনা বাঁধকে ভারতের জন্য অস্তিত্বগত হুমকি অভিহিত করে এই প্রকল্পে সমর্থন দিয়েছেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী। তবে গ্রাম, জমি আর জীবিকা পানির নিচে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় এর বিরোধিতা করছেন স্থানীয় আদিবাসীরা।

 

তিব্বতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু করেছে চীন। ভারতের আশঙ্কা, এই বাঁধের কারণে শুষ্ক মৌসুমে একটি বড় নদীর পানিপ্রবাহ ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। চীনের বাঁধের নেতিবাচক প্রভাব লাঘবে দ্রুত একটি বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ভারত সরকারও।

 

এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন (এনএইচপিসি) হাতে নিয়েছে ১৪ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি ধারণ ক্ষমতার আপার সিয়াং বহুমুখী বাঁধ প্রকল্প।

 

আরও পড়ুন: ঋণের চাপে ৪ মাসের সন্তানকে বিষ খাইয়ে মা-বাবার ‘আত্মহত্যা’

 

এ প্রকল্পের কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কমপক্ষে ১৬টি গ্রামও ১০ হাজার মানুষ। কৃষিজমি, ফলের বাগান আর জীবিকা হারানোর ভয়ে ভীত স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই এই প্রকল্পের সরাসরি বিরোধীতা করছেন তারা।

 

সরকারের বাঁধ নির্মাণ ঠেকাতে যন্ত্রপাতি ভাঙচুর ও পুলিশের অস্থায়ী শিবিরে আক্রমণ করছে বাসিন্দারা। এমনকি পাহারা বসিয়েছে গ্রামের প্রবেশকেন্দ্রে। তারা বলছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তাদের সাংস্কৃতিক অস্তিত্বই মুছে যাবে। 

 

যদিও সরকারি হিসাব বলছে, আপার সিয়াং বাঁধ তৈরি হলে পানির সংকট কিছুটা কমবে। সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হচ্ছে, গুয়াহাটির মতো শহরে পানির ঘাটতি ২৫ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশে নেমে আসতে পারে। আর বাঁধ আংশিক খালি রাখলে বন্যার ঝুঁকিও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। 

 

আরও পড়ুন: ভারতে বন্যা / তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের পথে ভূমিধসে ৩০ জনের মৃত্যু

 

তবে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় এমন প্রকল্প ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্কতা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সায়ানাংশু মোদক বলেন, ‘চীনের বাঁধটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় তৈরি হচ্ছে, যেখানে চরম দুর্যোগের ঘটনাও ঘটে থাকে।’

 

‘ভূমিধস, হিমবাহের হঠাৎ ভাঙন বা কাদামাটি ধসের মতো বিপদের ঝুঁকি আছে। তাই বাঁধের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ একেবারেই যৌক্তিক। এ নিয়ে দুই দেশের আলোচনায় বসা উচিত।’  

 

তথ্যসূ্ত্র: রয়টার্স 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন