তিন সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও গিলের জন্য কপাল পুড়ছে স্যামসনের!

৫ দিন আগে
সাঞ্জু স্যামসন কি তবে হতভাগা ক্রিকেটারদের তালিকায় নাম লেখাতে চলেছেন? আইপিএলে নিয়মিতই রানের বন্যা ছোটালেও জাতীয় দলে নিজেকে মেলে ধরতে না পারার বদনাম ছিল তার। আর যখন ভারতের নীল জার্সিতে নিজেকে মেলে ধরে জায়গা পাকা করে নিয়েছেন মনে করা হচ্ছিল, ঠিক তখনই প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে হাজির শুভমান গিল। গত বছর ভারতের জার্সিতে একের পর এক ব্যাটিং রেকর্ড গড়েছেন স্যামসন, অথচ আসন্ন এশিয়া কাপে হয়তো একটি ম্যাচও খেলা হবে না তার। এমনই বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগরকার এশিয়া কাপের জন্য যে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন, তাতে সবচেয়ে বড় চমক হয়ে এসেছে শুভমান গিলের অন্তর্ভুক্তি। দল ঘোষণার আগে গুঞ্জন ছিল, এশিয়া কাপের স্কোয়াডে জায়গা হচ্ছে না টেস্টের অধিনায়ক গিলের। কিন্তু, দল ঘোষণার পর দেখা গেল গিল শুধু যে দলে ফিরেছেন তাই নয়, তাকে টি২০ দলের সহ-অধিনায়কও বানানো হয়েছে। আর এর ফলেই কার্যত স্যামসনের এশিয়া কাপ খেলার দরজা বন্ধ হয়ে গেছে।


এখন প্রশ্ন জাগতে পারে—গিলের ফেরার সঙ্গে স্যামসনের সম্পর্ক কী?  এখানেই কঠিন বাস্তবতা। গিলের টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা সরাসরি স্যামসনের ওপর প্রভাব ফেলেছে। কেন?  দুটি কারণের কথা জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রথমত, আগরকার যখন স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়দের তালিকা পড়ছিলেন, তখন জিতেশ শর্মার নাম স্যামসনের আগে নেন, তারা দুজনই স্কোয়াডে আছেন উইকেটকিপার হিসেবে। যদিও স্যামসন গত কিছুদিন ধরে নিয়মিত দলের পরিকল্পনায় ছিলেন। দ্বিতীয়ত, গিলের মতো মানসম্পন্ন ব্যাটার, যিনি এখন সহ-অধিনায়ক, তিনি একাদশে খেলবেন এটাই স্বাভাবিক। আর গিল খেললে বাদ পড়বে কে? নামটা সহজেই অনুমানযোগ্য।

 

আরও পড়ুন: এক মহারাজের কাছেই হারল অস্ট্রেলিয়া


ভারতের সাবেক ক্রিকেটার আকাশ চোপড়া দল ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই এই তত্ত্বকে সমর্থন জানিয়েছেন। ২০২৪ সালে স্যামসন টি-টোয়েন্টিতে ভারতের জার্সিতে তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ১০৭ ও অপরাজিত ১০৯ রানের ইনিংসের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষেও খেলেছেন ১০১ রানের ইনিংস। দেখলে মনে হতে পারে তিনি তো নিশ্চিতভাবেই একাদশে জায়গা পাবেন, তাই না? কিন্তু আসল উত্তরটা ‘না’।


 

আইপিএলে নিজ নিজ ফ্র্যাঞ্চাইজির অধিনায়কত্ব করেন স্যামসন (বাঁয়ে) ও গিল। ছবি: আইপিএল


চোপড়ার ভাষায়, 'ভারত এখন সব ফরম্যাটে একজন নেতার দিকে এগোচ্ছে। এখান থেকেই শুরু। কিন্তু একজনের দলে ফেরা আরেকজনের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেটা হোক গিলের ব্যাট থেকে কিংবা আগরকারের কলমে (নির্বাচক হিসেবে), স্যামসনের ভবিষ্যৎ ঠিক হয়ে গেছে। সে খেলবে না। আপনারা দেখবেন সে বাইরে বসেই থাকবে, কারণ তিলক তিন নম্বরে নামবে আর হার্দিক ও সূর্যকুমার নিজেদের জায়গা ধরে রাখবে।'


আগরকারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। দল ঘোষণার সময় উল্লেখ করেন, 'স্যামসন খেলেছিল যখন গিল বাইরে ছিল,' অর্থাৎ স্যামসনকে পরোক্ষভাবে একজন বদলি খেলোয়াড় হিসেবেই দেখা হচ্ছে। যদিও স্পষ্টভাবে কিছু না বলে প্রশ্নটা অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টের দিকে ঠেলে দেন আগরকার, কিন্তু এর মানে আসলে স্পষ্টই।


আরও পড়ুন: বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যুতে যা বললেন বিসিবি সভাপতি


চোপড়া যেমন বললেন, 'এই দল নিয়ে একটি বিষয় পরিষ্কার—ব্যক্তিগত নামের চেয়ে এখানে জায়গা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটি ঠিক আছে, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু গিলের ফেরা মানে স্যামসন খেলবে না এবং জিতেশ শর্মাই হবেন উইকেটকিপার।'


গত বিশ্বকাপের পর থেকে অভিষেক শর্মা এবং সঞ্জু স্যামসন ভারতের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার। অভিষেক ১৬ ইনিংসে ৫৩৫ রান আর স্যামসন ৪৮৭ রান করেছেন। তবে উদ্বোধনী জুটি হিসেবে দুজনের পারফরম্যান্স ব্যর্থতার কথাই বলছে—১২ ইনিংসে মিলে তারা করেছেন মাত্র ১৬৫ রান, যেখানে পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি মোটে একটি। তবে, ব্যক্তিগতভাবে তাদের ব্যাটিং ক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন