তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে নতুন তথ্য দিলেন মিথিলা

১ সপ্তাহে আগে
শোবিজপাড়ায় এক সময়ের আলোচিত ও জনপ্রিয় সেলিব্রেটি জুটি ছিলেন জনপ্রিয় গায়ক-অভিনেতা তাহসান খান ও অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট প্রেমের সম্পর্কে পরিণতি দিয়ে বিয়ে করেন। কিন্তু দাম্পত্য জীবনের নয় বছর কাটতেই সেপারেশনে যান এ তারকা জুটি। এর ঠিক দুই বছর পরই সবাইকে অবাক করে দিয়ে তারা ঘোষণা দেন বিবাহ বিচ্ছেদের।

সম্প্রতি একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে নিজের ব্যক্তিজীবন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন মিথিলা। বিভিন্ন বিষয়ের আলাপচারিতায় বিবাহ বিচ্ছেদ প্রসঙ্গ নিয়ে কথা উঠলে নিজের জীবনের ফেলে আসা দিন নিয়ে কথা বলেন তিনি।  
মিথিলা বলেন, বিয়ে কেন ভাঙলো, সম্পর্ক কেন ভাঙলো অনেকেই এমন বোকা বোকা প্রশ্ন করেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, কোনো একটা কারণে কখনও কোনো সম্পর্ক ভাঙে না, এটা একদিনেও হয় না।

 

নিজের বিবাহ বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার বিচ্ছেদের সময় আমি আসলে সিদ্ধান্তই নিতে পারছিলাম না যে সম্পর্কে থাকবো, নাকি থাকবো না। আমার ডিভোর্স চাই নাকি ডিভোর্স চাই না। আমার মেয়ে আয়রার ১ বছর বয়সের মাথায় আমাদের সেপারেশন হয়।

 

জীবনের কঠিন সময়ের জার্নি বলতে গিয়ে মিথিলা বলেন,

ওই সময়টায় আমাকে প্রথম যে স্ট্রাগলটার মুখোমুখি হতে হয় সেটা হলো এখন থেকে একা একটা বাচ্চাকে আমার মানুষ করতে হবে। সেই সাথে আমরা দুজনেই ছিলাম পাবলিক ফিগার। সমাজ, আত্মীয়-স্বজন সবাই বিষয়টিকে কীভাবে দেখবে সেটা নিয়েও বেশ শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক চাপে ছিলাম।

 

এ অভিনেত্রী বলেন, আমার মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়। তখন সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ওত ছিল না। আমাদের সবাই শুধু টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখতো। সেটা দেখেই সবাই নিজেদের মতো ভেবেছে যে, তাদের একসঙ্গে দেখতে ভালো লাগছে, তাদের একটা বাচ্চা হয়েছে। খুব সুন্দর লাইফ ভক্তরা ধারণা করে নেয়। এর বাইরে কিন্তু আমাদের জীবনের জার্নিটার সঙ্গে ভক্তরা যুক্ত নন। যে কারণে আমাদের বাস্তব জীবনের উঠা-নামাটা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি।

 

পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত

 

ভক্তদের প্রসঙ্গে মিথিলা বলেন, আমাদের যখন বিচ্ছেদ হয় তখন সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নতুন শুরু হয়েছে। সবাই একজন অন্যজনের সাথে সহজে যুক্ত হতে পেরেছে। যে কারণে আমার মনে হয়, বিচ্ছেদের বিষয়টি পাবলিক ইভেন্ট হয়ে গিয়েছিল। আরেকটা কারণ হলো সবাই আমাদের সুখী দম্পতি ভাবতো, অনেকেই আমাদের  আদর্শ মানতো যে কারণে সে সময়ে কেউ বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না।

 

বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে এ সিঙ্গেল মাদার বলেন,

যে কোনো বিচ্ছেদ সহজ নয়। খুবই কঠিন। তার উপর আমার বয়স কম ছিল। আমি তখন মাত্র মা হয়েছি। জীবনে কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেয়া, ভালো-মন্দ বিচার করার কোনো ক্ষমতা আর শক্তি তখন আমার ছিল না। ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত জীবনকে একভাবে ভেবেছি, হঠাৎ করে জীবনটা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে যায়। হঠাৎ করে জানতে পারি, এতদিন যেখানে ছিলাম সেটা আমার ভবিষ্যত না।

 

একটু আফসোস করেই মিথিলা বলেন, আমার অভ্যাস ছিল গাড়ি করে অফিসে যাওয়া, আমার বাচ্চার অভ্যাস ছিল গাড়িতে করে ঘোরা। বিচ্ছেদের সময় আমার নিজের কোনো গাড়ি ছিল না। তখন অনুভব করি, মেয়েদের আসলে নিজের কোনো জায়গা নেই, বিয়ের আগে বাবার বাড়ি আর বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি। এভাবে দিন কাটে।  তাই আমি মনে করি, মেয়েদের অবশ্যই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়াটা খুব জরুরী।

 

আরও পড়ুন: মিথিলার জীবনে এসেছে ‘বসন্ত’

 

মিথিলা আরও বলেন, বিচ্ছেদের জন্য আমি তখন মানসিকভাবে প্রস্তুতই ছিলাম না। আমাদের ২০১৫ সালে সেপারেশন হয়। এরপর আমি দুই বছর অপেক্ষা করেছি। ভেবেছি, হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। মেনে নিতে পারছিলাম না। অবশেষে ২০১৭ সালে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, মনে হয় আমাদের সম্পর্কটা কাজ করছে না।

 

আরও পড়ুন: সুখবর দিলেন মিথিলা

 

সবশেষে এ অভিনেত্রী জানান, বিচ্ছেদের পর জীবন নিয়ে পরিকল্পনা করতে শুরু করেন। অনেক কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। সঞ্চয়ে মনোযোগী হন। যা তাকে বিচ্ছেদের বেদনা ভুলে থাকার শক্তি জুগিয়েছে। কাজের সফলতাও পেয়েছেন মিথিলা। বর্তমানে নিজের একটা থাকার জায়গা করেছেন। নিজের গাড়িতে করেই যাতায়াত করেন। জীবনের দর্শন হিসেবে মিথিলা মনে করেন, জটিলতা জীবনের অংশ। সেটা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের জীবনের জীবনে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন