গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে বোনকে নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ক্ষমতার অপব্যবহার স্পষ্ট থাকলেও গোপন ছিল তাদের আর্থিক লেনদেন। কিন্তু পট পরিবর্তনের পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনার ব্যাংক হিসাব জব্দ বা তলব করতে সময় নেয়া হয়েছে ৪ মাস।
তবে গত ১০ ডিসেম্বর তাদের ব্যাংক হিসাব তলবের খবর আসে গণমাধ্যমে। এখানেই শেষ নয়, গণমাধ্যমের তথ্য- বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ৫ মাস পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার বোনের সন্তানদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা ও রেহানার ব্যাংক হিসাব তলব
শুধু শেখ হাসিনা বা তার পরিবার নয়, গত ৫ মাসে আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী ৪০০ জনের বেশি ব্যক্তির হিসাব জব্দ করা হলেও এর বেশিরভাগই করা হয়েছে দীর্ঘসময় পরে। কারণ জানতে ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো বার্তা মেলেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে- স্বতন্ত্র সরকারি সংস্থা বিএফআইইউ তাদের কোনো তথ্য দেয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বিএফআইইউর তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সহজে বিনিময়যোগ্য না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে সংস্থাটির অফিস থাকলেও আইন অনুযায়ী তাদের তথ্য অত্যন্ত গোপনীয়।
আর্থিক খাতের বিশেষ গোয়েন্দা এই সেলের কাছে রয়েছে অতীত ও বর্তমানের সব অনিয়মের তথ্য। তাহলে কেন এতো সময় লাগে পদক্ষেপ নিতে?-এমন প্রশ্নে উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বয়ং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ। তবে হয়তো একটু সময় লাগছে।
আরও পড়ুন: ৩০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বিএফআইইউ, রয়েছে মোটা অংকের অর্থ
অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন, তাহলে কি অবাধ তথ্য থাকার পরও সেইফ এক্সিট অব ফাইন্যান্স বা অর্থের নিরাপদ স্থানান্তর নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে খোদ বিএফআইইউসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা? এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা অর্থ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে চেনে বিএফআইইউ। কিন্তু সংস্থাটি সময়মতো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এতে অপরাধী অর্থ সরিয়ে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ব্যাংক হিসাব জব্দের তালিকায় মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ রয়েছেন সাংবাদিকও।
]]>