সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘিওরের কুন্দুরিয়ার অবাক মার্কেটে সারাক্ষণ হুটহাট শব্দে ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল ভাঙানো হচ্ছে। কাঠের ঢেঁকির সঙ্গে বৈদ্যুতিক মোটর ও সার্কিট ব্রেকার যুক্ত করে আকতার হোসেন নিজেই উদ্ভাবন করেছেন এই ইলেকট্রনিক ঢেঁকি। এতে ধান চূর্ণ করে প্রাকৃতিক উপায়ে লাল চাল উৎপাদন করা হয়।
এখানে মনোয়ারা ও জাহানারা নামের দুই নারী সারাক্ষণ কাজ করেন। পাশে ধান সংরক্ষণের স্থান ও চাল প্যাকেজ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এখান থেকেই জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে চাল। প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত আমন ধানের ‘ভাওয়াইলা’, ‘দীঘা’, ‘ডাপো’ ও আউশ ধানের ‘কালো মানিক’ জাতের চাল উৎপাদন করেন তিনি। স্বাস্থ্যসম্মত ও উপকারী হওয়ায় এলাকাজুড়ে তার ঢেঁকি ছাঁটা ঘরে ভিড় করছে ক্রেতারা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আব্দুল কবির বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলাম। ডাক্তার আমাকে লাল চাল খেতে বলেছিলেন। পরে আকতার হোসেনের ঢেঁকি ঘরের চাল খেয়ে এখন আমি সুস্থ।’
রহিম উদ্দিন, যিনি বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন, বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল খেয়ে আমি ভালো আছি। আকতার হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জের গ্রামীণ সড়কের ৪০০ কিমি. চলাচলের অনুপযোগী
আরেক গ্রাহক কামাল হোসেন বলেন, ‘আগে অতিরিক্ত ওজনে ভুগতাম। সাত বছর ধরে ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল খেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ আছি।’
আকতার হোসেনের ঢেঁকি ঘরে তিনজনের কর্মসংস্থান হয়েছে। নিয়মিত বেতন ও সুবিধা পেয়ে খুশি তারা। কর্মচারী আনোয়ারা বলেন, ‘আগে অনেক কষ্টে দিন কাটতো। এখন এখানে কাজ করে মাসে সাত থেকে আট হাজার টাকা বেতন পাই। জীবনে অনেক উন্নতি হয়েছে।’
আরেক কর্মচারী জাহানারা বলেন, ‘এখানে খুব ভালো মানের চাল হয়। আমাদের চাল অনেক জেলার মানুষ খায় এটা আমাদের জন্য গর্বের।’
আকতার হোসেন জানান, ২০২০ সালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসক তাকে লাল চালের ভাত খাওয়ার পরামর্শ দেন। তখন থেকেই তিনি নিজেই ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল উৎপাদনের চিন্তা করেন। ফেসবুক ও ইউটিউব দেখে তৈরি করেন ইলেকট্রনিক ঢেঁকি। শুরুতে অনেকেই উপহাস করলেও এখন তার চাল বিক্রি হচ্ছে জেলার বাইরেও।
তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে প্রায় ৫ টন আমন ও আউশ ধানের চাল বিক্রি হয়। নিজের অসুস্থতা কাটিয়ে এখন সুস্থ আছি এবং আয় করছি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।’
]]>
৩ দিন আগে
২







Bengali (BD) ·
English (US) ·