ঢাকায় আবাসিক হোটেলের খাবার খেয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যুর অভিযোগ

১ সপ্তাহে আগে
রাজধানীর মগবাজারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রবাসী ও তার স্ত্রী এবং সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অভিযোগ হোটেলের খাবারে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৯ জুন) একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক।

 

নিহতরা হলেন- সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৬) ও ছেলে নাঈম হোসেন (১৮)। তারা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের ছেরাজুল হক বেপারী বাড়ির বাসিন্দা।

 

তিনি জানান, লক্ষ্মীপুরের সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। ডাক্তারের সিরিয়াল না পেয়ে মগবাজারে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রীযাপন করেন তারা। সেখানেই খাবার খাওয়ার পর বমি করেন। পরে তাদের উদ্ধার করে আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা।

 

ওসি আরও জানান, মনির সৌদি আরবে ব্যবসা করতেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হবে।

 

আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ, নারীসহ আটক ৫

 

এদিকে  জানা গেছে,  স্ত্রী ও ছেলেসহ প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাটি পুলিশের ধারণা বিষক্রিয়া হলেও, স্বজনদের দাবি এটি ঠান্ডা মাথার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

 

প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা করাতে শনিবার বিকেলে মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালের পাশে হোটেল সুইট স্লিপে উঠেছিলেন প্রবাসী মনির হোসেন। রাতে কেয়ারটেকারের মাধ্যমে আনা খাবার খেয়ে তিন জনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক প্রথমে স্ত্রী স্বপ্নাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণ পর মারা যান মনির ও ছেলে নাঈম। প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে কাতর স্বজনরা। এটিকে নিছক দুর্ঘটনা মানতে নারাজ তারা। বলছেন—এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

 

ঘটনার পরই হোটেলে অভিযান চালায় ডিবি ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। তারা আলামত সংগ্রহ করেছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে

 

পরিবারটির আত্মীয়ের মাধ্যমেই খাবার সরবরাহ করা হয়েছিল। তাদের দেহে বিষক্রিয়ার আলামতও মিলেছে বলেও জানান রমনা থানার ইন্সপেক্টর (ডিবি) আকতার হোসেন।

 

তবে মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে অপেক্ষা করতে হবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পাঠানো হবে তাদের লক্ষ্মীপুরের গ্রামের বাড়িতে। সেখানে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।

 

মনির হোসেনের চাচাত ভাই মো. জাকির হোসেন জানান, বিকেলে গ্রামের আত্মীয় স্বজনের ফোনে ঘটনাটি জানতে পারি৷ সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় আদ-দ্বীন হাসপাতালে এসে ৩ জনের মরদেহ দেখতে পাই।

 

তিনি বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তবে পুলিশ ও হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যতটুকু শুনেছি, শনিবার বিকেলে তারা হোটেলে উঠেছিলেন। ঢাকায় মনিরের কয়েকটি ফ্ল্যাট আছে। আর সেগুলো দেখাশোনা করতেন তার কেয়ারটেকার রফিকুল ইসলাম। রফিকুলই তাদেরকে শনিবার ওই হোটেলে উঠিয়ে দিয়ে এসেছিলেন। পুলিশ রফিকুলসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরে নিয়ে গেছেন। তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে কিছু জানা যেতে পারে। মনিরের ছোট দুই ছেলের বয়স ১৪ ও ৯ বছর। তারা গ্রামের বাড়িতে রয়েছে।

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন