ঢাকায় অপহৃত এসএসসি পরীক্ষার্থী সাতক্ষীরায় উদ্ধার

১ সপ্তাহে আগে
রাজধানী ঢাকার মগবাজার এলাকা থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত এসএসসি পরীক্ষার্থী আরেফিন কামরুল ইসলামকে সাতক্ষীরা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে সাতক্ষীরা শহরের নিউমার্কেট এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ।


উদ্ধারকৃত এসএসসি পরীক্ষার্থী আরেফিন কামরুল ইসলাম (১৭) ঢাকা জেলার পূর্ব রামপুরা সালামবাগ মসজিদ এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা হারুনুর রশিদ খান এর পুত্র। তিনি বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।


এদিকে, পুলিশ নিরাপত্তা হেফাজতে থাকা আরেফিন কামরুল ইসলাম জানায়, সে ঢাকার খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সে রামপুরার বাসা থেকে ল্যাপটপ মেরামতের উদ্দেশ্যে বাসে এ্যালিফ্যান্ট রোডের একটি দোকানে যাচ্ছিল। আফগানিস্থানে ইসরাইলি আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞের কারণে মিছিলকে ঘিরে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মগবাজার ফ্লাইওভার নামক স্থানে সে বাস থেকে নেমে সামনে হাঁটতে শুরু করে। এসময় এক ব্যক্তি তাকে পিছন দিক থেকে ডাক দেয়। পিছন দিকে ফিরতেই কতিপয় ব্যক্তি তাকে কয়েকবার ঘাড় ঘুর্ণন দেয়। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। 

আরও পড়ুন: সুন্দরবনে দস্যু বাহিনীর হাত থেকে নারীসহ ৩৩ জেলে উদ্ধার

পরবর্তীতে উক্ত দুর্বৃত্তরা তাকে একটি গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করে এবং তার কাছে থাকা ল্যাপটপ ও বাটোন ফোনটি নিয়ে নেয়। এরপর একটি ঘরে তাকে আটকে রেখে তার দুটি হাত ও পা টেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে। দুর্বৃত্তরা তাকে ঘরের মধ্যে রেখে চলে যায়। একপর্যায়ে সে একটি ভাঙা টিন দিয়ে হাত ও পায়ের বাঁধন কেটে সেখান থেকে পালিয়ে আসে। তাকে যাতে দুর্বৃত্তরা চিনতে না পারে সেজন্য সে গায়ে কাদা মাটি মাখে। কয়েক ঘণ্টা পায়ে হেঁটে সে ভোরে সাতক্ষীরার নিউমার্কেট এলাকায় একটি চায়ের দোকানে যায়। 


সেখান থেকে সে তার বাবা হারুণ-অর-রশিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। এরপর শনিবার ভোরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর থানায় নিয়ে যায়।


আরেফিন কামরুল ইসলামের বাবা হারুণ-অর-রশিদ জানান, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি বৃহষ্পতিবার রাতে রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে তার ছেলেকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। টাকা না দিলে ছেলেক হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। ছেলেকে ছাড়াতে তিনি তার মেয়ের মাধ্যমে চার দফায় ২৬ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধও করেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় তিনি পুলিশের শরণাপন্ন হন। ডেমরা, রামপুরা ও নারায়ানগঞ্জের পুলিশ যৌথভাবে নারায়ণগঞ্জের কয়েক জায়গায় অভিযান চালায়। শনিবার ভোরে ছেলের ফোন পেয়ে তিনি সাতক্ষীরা সদর থানাকে অবহিত করেন। পরে তিনি সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।

আরও পড়ুন: মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পেলেন লামার অপহৃত শ্রমিকরা

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, ভিকটিম আরেফিন কামরুলকে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ সাতক্ষীরায় পৌঁছেছে।


সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ ইমরান হোসেন জানান, রামপুরা থানার ম্যাসেজ পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ভোরে শহরের নিউমার্কেট এলাকা থেকে আরেফিন কামরুল ইসলামকে উদ্ধার করে। তাকে সাতক্ষীরা সদর থানার নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাকে রামপুরা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ চিরুনি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন